বৃহস্পতিবার, ২৪ জুলাই, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


গুরুদাসপুর (নাটোর) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: জুলাই ২৩, ২০২৫, ১০:০৯ পিএম

পানির অভাবে বিপাকে পাটচাষিরা

গুরুদাসপুর (নাটোর) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: জুলাই ২৩, ২০২৫, ১০:০৯ পিএম

জমি থেকে পাট কাটছেন কৃষক। ছবি- সংগৃহীত

জমি থেকে পাট কাটছেন কৃষক। ছবি- সংগৃহীত

ভরা বর্ষার মৌসুম হলেও চলনবিল অঞ্চলের খাল-বিল-ডোবা এখনো পানিশূন্য। এতে পানির অভাবে পাট পচানো নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছেন স্থানীয় কৃষকেরা। অনেকেই চড়া দামে পুকুর ভাড়া নিয়ে পাট জাগ দিচ্ছেন। তবে কৃষি বিভাগ ‘রিবন রেটিং’ পদ্ধতিতে পাট পচানোর পরামর্শ দিয়েছে।

চলনবিল ঘেঁষা নাটোরের গুরুদাসপুর, বড়াইগ্রাম, সিংড়া, সিরাজগঞ্জের তাড়াশ ও রায়গঞ্জসহ বিভিন্ন উপজেলার কৃষকরা জানান, এ বছর অন্যান্য বছরের তুলনায় পাটের ফলন ভালো হয়েছে। কিন্তু নদীতে পানি না থাকায় আশপাশের খাল-বিল-ডোবা শুকিয়ে গেছে। ফলে পাট কেটে মাঠেই রেখে দিতে হচ্ছে। রোদে পাট শুকিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন তারা।

নাটোরের চাষি আলমগীর হোসেন, সুজন আলী ও মনিরুল ইসলাম জানান, সার, বীজ, সেচ, কীটনাশক ও শ্রমিক মিলে প্রতি বিঘায় খরচ হয়েছে প্রায় ১৬ হাজার টাকা। এখন পাট জাগ দেওয়ার জন্য পুকুর ভাড়া দিতে হচ্ছে আড়াই হাজার টাকা করে।

আরেক কৃষক সোবহান মন্ডল বলেন, ‘পুকুরে জাগ দিলে পাটের গুণগত মান নষ্ট হয়। প্রাকৃতিক বিলে পচানো পাটের আঁশ হয় উজ্জ্বল ও টেকসই। অনেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে গিয়ে পানিযুক্ত বিল খুঁজে জাগ দিচ্ছেন।’

অন্যদিকে পুকুর মালিক সাজেদুর রহমানসহ কয়েকজন জানান, ডিজেলচালিত সেচপাম্প দিয়ে পুকুরে পানি ধরে রাখছেন তারা। কৃষকদের অনুরোধে পুকুর ভাড়া দিলেও পানি ধরে রাখতে খরচ হওয়ায় কিছুটা বেশি ভাড়া নিতে হচ্ছে।

রাজশাহী বিভাগের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক ড. আজিজুর রহমান বলেন, ‘বানের পানি না থাকায় পাট পচাতে সমস্যা হচ্ছে। কৃষকদের জন্য আগের বিকল্প পদ্ধতিগুলো তেমন কার্যকর হয়নি। এখন আমরা রিবন রেটিং পদ্ধতির দিকে গুরুত্ব দিচ্ছি। এ ছাড়া যেখানে কিছুটা পানি রয়েছে, সেসব স্থানে পাট পচাতে উৎসাহিত করা হচ্ছে।’

কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে রাজশাহী বিভাগের চার জেলায় পাটের আবাদ হয়েছে ৫৩ হাজার ৮৩৫ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে রাজশাহীতে ১৭ হাজার ৩০৫, নওগাঁয় ৩ হাজার ৪১০, নাটোরে ৩ হাজার ৮৮ ও চাঁপাইনবাবগঞ্জে ২ হাজার ২৪০ হেক্টর জমিতে। 

অন্যদিকে বগুড়া অঞ্চলের চার জেলায় চাষ হয়েছে ৬৯ হাজার ১৫ হেক্টর জমিতে—বগুড়ায় ৮ হাজার ৯৬০, জয়পুরহাটে ২ হাজার ৮৮৫, পাবনায় ৪২ হাজার ৫০০ ও সিরাজগঞ্জে ১৪ হাজার ৬৭০ হেক্টর।

২০২০-২১ সালে রাজশাহী অঞ্চলে পাটের আবাদ ছিল ৪৬ হাজার ৯১৬ হেক্টর। ছয় বছরে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৩ হাজার ৮৩৫ হেক্টরে। তবে বগুড়া অঞ্চলে ২০২২-২৩ মৌসুমে ৭৭ হাজার ৯৮ হেক্টরে পাট চাষ হলেও এবার তা কমে দাঁড়িয়েছে ৬৯ হাজার ১৫ হেক্টরে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সোনালি আঁশ হিসেবে খ্যাত পাটের গুণগত মান রক্ষায় প্রাকৃতিক পানিতে পচানো অত্যন্ত জরুরি। তবে দীর্ঘদিনের খরার ফলে নদ-নদী শুকিয়ে যাওয়ায় জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব পড়েছে কৃষিতে। তাই বিকল্প ও টেকসই সমাধান না হলে ভবিষ্যতে আরও সংকটে পড়তে পারেন পাটচাষিরা।

রূপালী বাংলাদেশ

Shera Lather
Link copied!