রাজশাহীর শুটিংস্পটে ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনায় চিত্রনায়ক শাকিব খানের ‘তাণ্ডব’ সিনেমার শুটিং সেট যেন রীতিমতো স্তব্ধ হয়ে যায়।
স্টান্টম্যান মনির হোসেনের মৃত্যুতে ঢালিউডে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। কিন্তু সহকর্মীর এই মর্মান্তিক পরিণতিতে শাকিবের নিরবতা ঘিরে শুরু হয়েছে বিতর্ক।
রোববার (৪ মে) ‘তাণ্ডব’-এর শুটিং চলাকালেই হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন স্টান্টম্যান মনির। পরে হাসপাতালে নেওয়ার পর তার মৃত্যু হয়।
অথচ, জানা গেছে এত বড় একটি দুর্ঘটনার পরও শাকিব খান একবারের জন্যও হাসপাতালে যাননি, এমনকি মনিরের পরিবারের সঙ্গেও যোগাযোগ করেননি। বিষয়টি নিয়ে শোবিজের অনেকেই বিস্মিত, ক্ষুব্ধ। এই নীরবতাই যেন বিস্ফোরণ ঘটাল সামাজিক মাধ্যমে।
চিত্রনায়িকা রত্না কবির নিজের ফেসবুক প্রোফাইলে শাকিবকে উদ্দেশ করে এক খোলা চিঠিতে লেখেন, ‘সুপ্রিয় শাকিব খান, কাল আপনার "তাণ্ডব" সিনেমার শুটিংয়ের সেটে মনির মারা গেলেন। শুনেছি, আপনি একবারও ছেলেটির কাছে হাসপাতালে বা তার পরিবারের কাছে যাননি। আপনি একবারও তার পাশে দাঁড়ালেন না। এটা নতুন নয়, আপনি কখনো পেছনের গল্প মনে রাখেন না।’
পোস্টে রত্না আরও লেখেন, ‘এখন সময় হয়েছে বাস্তবের নায়ক হয়ে ওঠার। আপনি অনেক কিছু পেয়েছেন বাংলা সিনেমা থেকে। এখন কিছু ফেরত দেওয়ার সময়। মনিরের পরিবারের পাশে দাঁড়ান। পর্দার পেছনের যারা আপনাকে আজকের শাকিব বানিয়েছে, তাদের ভুলে যাবেন না।’
পোস্টের শেষভাগে তার টোন আরও দৃঢ় হয়ে ওঠে ‘সিনেমা থেকে অনেক পেয়েছেন, অনেক নিয়েছেন। এখন দিতে শিখুন। যতই ইংরেজি শিখেন, পাকিস্তানি ভাষা বলতে পারেন আর হিন্দি ভাষা বলে বাহবা পান আপনি কিন্তু বাংলা চলচ্চিত্র আর বাংলাদেশেরই একজন মানুষ।’
এই খোলা চিঠির পরপরই নেটদুনিয়ায় ঝড় উঠে যায়। অনেকেই বলেন, ‘তাণ্ডব’ সিনেমার পুরো ইউনিটের উচিত ছিল মনিরের পরিবারের পাশে দাঁড়ানো। শাকিবের পক্ষ থেকে একটি প্রতিক্রিয়াও আশা করেছিলেন অনেকে, যা এখনও পাওয়া যায়নি।
মনির হোসেন ছিলেন নারায়ণগঞ্জের বাসিন্দা। দীর্ঘ এক যুগেরও বেশি সময় ধরে তিনি স্টান্টম্যান হিসেবে কাজ করে আসছিলেন। বহু নায়কের সাহসী দৃশ্যের আড়ালে মনিরের ঘাম, কষ্ট, আর ঝুঁকিই ছিল ক্যারিয়ারের সাফল্যের বড় পাথেয়।
এখন দেখা যাক, পর্দার ‘হিরো’ শাকিব বাস্তবেও হিরোর দায়িত্ব নেন কি না এমনটাই বলেন মনিরের সহকর্মী ও ভক্তরা।