বৃহস্পতিবার, ০১ মে, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: এপ্রিল ২১, ২০২৫, ১০:৪৪ এএম

নাভিতে তেল দেওয়ার উপকারিতা

রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: এপ্রিল ২১, ২০২৫, ১০:৪৪ এএম

নাভিতে তেল দেওয়ার উপকারিতা

ছবি: সংগৃহীত

নাভি আমাদের শরীরের কেন্দ্রবিন্দু। জন্মের পর এই ছোট্ট গর্তটি হয়তো গুরুত্ব হারায়, কিন্তু আমাদের পূর্বপুরুষেরা এটিকে শরীর ও মনের সুস্থতার এক গোপন দরজা বলে মনে করতেন। যুগ যুগ ধরে মানুষ নাভিতে তেল দেওয়ার অভ্যাস মেনে চলেছে। কেউ করেছেন ঠান্ডা কমাতে, কেউ মাথাব্যথায়, কেউ করেছেন পেট ব্যথা উপশমে। আজও অনেক ঘরোয়া চিকিৎসায় এই পদ্ধতি বেঁচে আছে।

তবে আধুনিক বিজ্ঞান ও হোমিওপ্যাথি কিংবা আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা পদ্ধতিও এখন এই অভ্যাসের পক্ষে কথা বলছে। শরীরের কেন্দ্রে তেল প্রয়োগ করলে শুধু বাহ্যিক না, অভ্যন্তরীণ উপকারও পাওয়া যায় বলে বিশেষজ্ঞরা মত দেন।

নাভিতে সরিষার তেল দিলে কী হয়?

সরিষার তেল আমাদের উপমহাদেশের একটি ঘরোয়া ঐতিহ্য। ঠান্ডা লাগা, পেট ব্যথা বা হজমে সমস্যা হলে প্রাচীন কালে নাভিতে ২-৩ ফোঁটা সরিষার তেল দেওয়ার চল ছিল। আজও অনেক মা-দাদি এই পদ্ধতিটি অনুসরণ করেন।

এর উপকারিতা গুলো হলো:

সরিষার তেল পেটের নার্ভগুলোকে উষ্ণতা দেয়, যা হজম প্রক্রিয়ায় সাহায্য করে। তেলের তাপ গুণ শরীরে ছড়িয়ে পড়ে, যা ঠান্ডা কমাতে সাহায্য করে। তেল ভেতর থেকে ত্বককে পুষ্টি দেয়। অনেক নারীর মাসিক সমস্যা দূর করতে নাভিতে তেল দেওয়ার পরামর্শ দেন আয়ুর্বেদ চিকিৎসকরা।

তবে সরিষার তেল গরম প্রকৃতির হওয়ায় বেশি বা নিয়ম বহির্ভূত ব্যবহার অস্বস্তি আনতে পারে। বিশেষ করে গর্ভাবস্থায় এটি ব্যবহারে সাবধানতা প্রয়োজন।

নাভিতে তেল দেওয়ার উপকারিতা কী কী?

আয়ুর্বেদ মতে, নাভি হচ্ছে শরীরের ‌‘মার্ম পয়েন্ট’, যেখানে শরীরের শতাধিক নার্ভ সংযুক্ত। তাই নাভিতে তেল দিলে এই নার্ভগুলো সক্রিয় হয় এবং নিচের সমস্যাগুলোতে উপশম মেলে:

১. হরমোন ব্যালেন্স রক্ষা করে: বিশেষ করে নারীদের জন্য এটি উপকারী। PCOS, অনিয়মিত পিরিয়ড, ওভারি সমস্যা ইত্যাদিতে এটি সহায়তা করতে পারে।

২. ত্বক ও ঠোঁট ফাটা কমায়: নাভির মাধ্যমে তেল রক্তসঞ্চালনে প্রভাব ফেলে, ফলে ত্বক হাইড্রেটেড থাকে। বিশেষ করে শীতে ঠোঁট ও পা ফাটার সমস্যা কমে।

৩. মানসিক প্রশান্তি এনে দেয়: অলিভ অয়েল বা নারিকেল তেল নাভিতে দিলে রাতে ভালো ঘুম হয়, কারণ এটি স্নায়ু শান্ত করে।

৪. যৌন স্বাস্থ্য উন্নত করে: বিশেষ করে নারিকেল বা কালো তিলের তেল প্রজননক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে বলে অনেক গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে।

৫. চোখের নিচে কালি ও মাথাব্যথা কমায়: নাভিতে ঘুমানোর আগে অলিভ অয়েল দিলে চোখের নিচের ডার্ক সার্কেল ধীরে ধীরে হালকা হয়।

নাভিতে তেল দেওয়ার নিয়ম

রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে নাভি ও তার আশেপাশের অংশ পরিষ্কার করে নিন। কয়েক ফোঁটা (২-৩) তেল নাভিতে দিন। আঙুলের ডগা দিয়ে হালকা করে মালিশ করুন, ঘড়ির কাটার মতো ঘূর্ণায়মানভাবে। চাইলে তুলা দিয়ে নাভি ঢেকে রাখতে পারেন।

গর্ভাবস্থায় নাভিতে তেল দিলে কী হয়?

গর্ভাবস্থায় পেটের চামড়ায় টান পড়ে। নাভিতে তেল দিলে এই টান অনেকটা হালকা হয়। আবার, অনেক নারী বলে থাকেন—তেল দিলে তারা তুলনামূলক স্বস্তি পান।

উপকারিতা: স্ট্রেচ মার্ক কমে, পেটের ত্বক নরম থাকে, কিছুটা ঘুম ভালো হয় ও হালকা ব্যথায় আরাম পাওয়া যায়।

তবে সব সময় মনে রাখতে হবে—এ সময় যেকোনো তেল ব্যবহারের আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। অনেক সময় শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে গেলে বিপদও হতে পারে।

গর্ভাবস্থায় সরিষার তেল দিলে কি হয়?

সরিষার তেল গরম প্রকৃতির হওয়ায়, এটি গর্ভবতী নারীর জন্য সবসময় নিরাপদ নাও হতে পারে। কেউ কেউ এটি দিলে পেট ব্যথা বা অস্বস্তি অনুভব করেন।

তাই গর্ভাবস্থায় নারিকেল তেল বা অলিভ অয়েলই বেশি নিরাপদ ও উপকারী।

অলিভ অয়েল বা জলপাই তেল – সেরা বিকল্প কেন?

অলিভ অয়েল এখন স্বাস্থ্য সচেতনদের প্রথম পছন্দ। এর উপকারিতা শুধু খাবারে নয়, বাহ্যিক ব্যবহারে বেশি:

অলিভ অয়েল বা জলপাই তেল ব্যবহারে ত্বকের আর্দ্রতা রক্ষা করে, অ্যান্টি-অক্সিডেন্টে ভরপুর, চোখ ও ঠোঁটের যত্নে কার্যকর ও ঘুমের গুণমান বৃদ্ধি করে। 

তাই আপনি যদি নিয়মিত অভ্যাস করতে চান—তবে অলিভ অয়েল হতে পারে সেরা বিকল্প।

নাভি ও তেলের সম্পর্ক – বিজ্ঞান না বিশ্বাস?

অনেকেই মনে করেন—নাভিতে তেল দেওয়া কুসংস্কার। কিন্তু প্রাচীন চিকিৎসা পদ্ধতি, পারিবারিক অভিজ্ঞতা ও আধুনিক গবেষণার কিছু দিক বলছে—এটি নিছকই কুসংস্কার নয়।

বিশেষ পরামর্শ

তেল অবশ্যই বিশুদ্ধ, ঘানি ভাঙ্গা বা প্রাকৃতিক উৎসের হওয়া উচিত। তবে তেল ব্যবহার করতে হবে সচেতনভাবে, নিয়ম মেনে এবং প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে।

Link copied!