অনেকেই সকালে ঘুম থেকে উঠে প্রথমেই ব্রাশ করেন, আবার কেউ কেউ চোখ মেলেই এক গ্লাস পানি পান করে দিন শুরু করেন। তবে প্রশ্ন থেকে যায়- সকালে ব্রাশ না করে পানি পান করা কি স্বাস্থ্যসম্মত? এতে কি কোনো ক্ষতি হতে পারে?
এই বিষয়ে স্বাস্থ্যসচেতন মানুষের মধ্যে দ্বিধা রয়েছে। কেউ মনে করেন এটি মুখের ব্যাকটেরিয়া পাকস্থলীতে পাঠিয়ে দেয়, ফলে তা ক্ষতিকর হতে পারে। আবার কেউ বলেন, এই অভ্যাস শরীরের জন্য আশীর্বাদস্বরূপ।
তাহলে বিজ্ঞানের চোখে সত্যিটা কী? চলুন জেনে নেই—
বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা কী বলে?
স্বাস্থ্যবিষয়ক মার্কিন ওয়েবসাইট ‘লিব্রেট’-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সকালে ব্রাশ না করেই পানি পান করা মোটেও ক্ষতিকর নয়। বরং এতে শরীর উপকৃত হয়।
ঘুমের পরে মুখে কিছু ব্যাকটেরিয়া থাকলেও, তা পাকস্থলীর উচ্চ এসিডিক পরিবেশে প্রবেশ করে ধ্বংস হয়ে যায়। অর্থাৎ, সেগুলো শরীরের কোনো ক্ষতি করতে পারে না।
জাপানি সংস্কৃতিতেও দেখা যায়, সেখানকার মানুষ সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে দাঁত না মেজেই প্রথমে ২ গ্লাস পানি পান করেন। তারা বিশ্বাস করেন, এটি শরীরের অভ্যন্তরীণ পরিস্কার এবং রোগপ্রতিরোধে সহায়ক।
বাসি মুখে পানি খাওয়ার ৬টি উপকারিতা
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
মুখের লালায় থাকা প্রাকৃতিক ব্যাকটেরিয়া ও এনজাইম শরীরে প্রবেশ করে ইমিউন সিস্টেমকে সক্রিয় করে তোলে। এটি ভাইরাস ও সংক্রমণের বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষা গড়ে তোলে।
পরিপাকতন্ত্র পরিষ্কার রাখে
রাতের ঘুমের সময় হজমতন্ত্রে যে টক্সিন জমে, পানি পান করার মাধ্যমে তা ধীরে ধীরে পরিষ্কার হয়ে যায়। এতে হজম ভালো হয়, অ্যাসিড ব্যালান্স ঠিক থাকে এবং বদহজম বা গ্যাস্ট্রিকের ঝুঁকি কমে।
মেটাবলিজম বাড়ায়
খালি পেটে পানি পান করলে শরীরের বিপাকক্রিয়া (metabolism) ত্বরান্বিত হয়। এটি দেহে শক্তির প্রবাহ বাড়ায় এবং সারাদিন ফুরফুরে অনুভূত হয়।
মাথাব্যথা ও মাইগ্রেন প্রতিরোধে কার্যকর
শরীরের পানির ঘাটতির অন্যতম লক্ষণ হচ্ছে মাথাব্যথা। সকালে পানি খেলে হাইড্রেশন ঠিক থাকে, ফলে মাইগ্রেন বা মাথাব্যথার সম্ভাবনা কমে।
ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক
সকালে পানি পান ক্ষুধা কমায় এবং বেশি খাবার খাওয়ার প্রবণতা হ্রাস করে। এতে অতিরিক্ত ক্যালরি গ্রহণ কম হয় এবং ধীরে ধীরে ওজন হ্রাসে সহায়তা করে।
ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায়
সকালের পানি দেহের টক্সিন দূর করে এবং রক্ত পরিষ্কার রাখে। এতে ব্রণ বা ত্বকের ফুসকুড়ি কমে এবং ত্বক উজ্জ্বল হয়।