ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন, ২০২৫

বই পড়ার উপকারিতা

ফিচার ডেস্ক
প্রকাশিত: জুন ২৬, ২০২৫, ০৭:৩৫ এএম
ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

আজকাল রিল, ইউটিউব শর্টস বা টিকটক ভিডিও দেখার ফাঁকে আমাদের চোখে পড়ে না আর বইয়ের পৃষ্ঠা। একটা বই পড়ে শেষ করতে সময় লাগে, ধৈর্য লাগে- আর সেটাই যেন এখনকার ব্যস্ত জীবনে বিলাসিতা! কিন্তু আপনি যদি জানতেন, নিয়মিত বই পড়ার কী অসাধারণ উপকারিতা- তাহলে হয়তো আবার তুলে নিতেন একটি বই, অন্তত প্রতিদিন ৩০ মিনিটের জন্য হলেও।

চলুন জেনে নিই, বই পড়ার মাধ্যমে আপনি কী কীভাবে উপকৃত হতে পারেন, যা কোনো রিল বা ভিডিও আপনাকে দিতে পারবে না।

জ্ঞানের ভাণ্ডার সমৃদ্ধ করে

বই হচ্ছে মানুষের চিন্তার নির্যাস। প্রতিটি পৃষ্ঠা যেন কোনো এক ব্যক্তির অভিজ্ঞতা, গবেষণা ও উপলব্ধির সংক্ষিপ্ত প্রতিফলন। একটি ভালো বই পড়লেই আপনি একটি বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ ধারণা পেতে পারেন, যেটা ১০ মিনিটের ইউটিউব ভিডিও বা সোশ্যাল মিডিয়ার সারাংশে সম্ভব নয়।

ইলন মাস্কে যখন জিজ্ঞেস করা হয়, ‘আপনি কীভাবে রকেট বানাতে জানলেন?’ তিনি হেসে উত্তর দেন, ‘বই পড়ে।’

মস্তিষ্ককে রাখে সুস্থ ও সচল

বিজ্ঞান গবেষণা বলছে, বই পড়ার সময় আমাদের ব্রেনে নিউরনের মধ্যে সিগন্যাল প্রবাহ দ্রুতগতিতে ঘটে, মস্তিষ্কের নিউরাল কানেকশন শক্তিশালী হয়।

এক গবেষণায় দেখা গেছে, যারা প্রতিদিন বই পড়েন, তাদের ডিমেনশিয়া, আলঝেইমারস রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কম।

মনোযোগ ও ফোকাস বাড়ায়

রিল বা শর্ট ভিডিওর যুগে আমাদের গড় মনোযোগ স্থায়ী হয় মাত্র ৮ সেকেন্ডে। অথচ একটা বই পড়তে হলে আপনাকে মনোযোগ ধরে রাখতে হয় মিনিটের পর মিনিট, ঘণ্টার পর ঘণ্টা।

প্রতিদিন ৩০ মিনিট বই পড়লে আপনার ‘ফোকাস মাংসপেশি’ শক্তিশালী হয়। কাজে মনোযোগ দিতে শেখেন, সময় ধরে পড়ালেখা বা পরিকল্পনা করতে পারেন।

কল্পনাশক্তির উন্নয়ন

বই পড়া মানেই লেখকের শব্দ থেকে নিজের মনে ছবি আঁকা। বিশেষ করে সাহিত্য, কল্পবিজ্ঞান বা ইতিহাসের বই আপনাকে সময় ও জগত পাড়ি দিতে শেখায়। আপনি যখন হ্যারি পটার, মিসির আলী, সত্যান্বেষী ব্যোমকেশ বা ফেলুদা পড়েন, তখন আপনি শুধু চরিত্র পড়েন না, বরং তাদের জগতে ঘুরে বেড়ান। এ অভিজ্ঞতা শুধুই বই দিতে পারে।

সহানুভূতিশীল ও মানবিক করে তোলে

বিশ্ববিদ্যালয় অব সাসেক্সের এক গবেষণায় বলা হয়, বই পাঠ আমাদের ‘থিওরি অব মাইন্ড’ বাড়ায়- অর্থাৎ আমরা অন্যদের অনুভূতি ও মানসিক অবস্থাকে ভালোভাবে বুঝতে শিখি।

কাহিনি বা উপন্যাস পড়ার সময় আমরা অন্য মানুষের জীবনের কষ্ট, সংগ্রাম, আবেগ ও আশা অনুভব করি। এতে করে নিজের আশপাশের মানুষের প্রতি সহমর্মিতা ও সহানুভূতির অনুভব বাড়ে।

মানসিক চাপ ও উদ্বেগ কমায়

যুক্তরাজ্যের ‘মিন্ডলাব ইন্টারন্যাশনাল’–এর এক গবেষণায় দেখা যায়, মাত্র ৬ মিনিট বই পড়লেই মানসিক চাপ প্রায় ৬৮% পর্যন্ত কমে যায়। বই পড়ার সময় হার্টরেট কমে, মস্তিষ্কে অক্সিজেন সরবরাহ বাড়ে, এবং মানসিক প্রশান্তি আসে- যা ঘুম ও মুড দুটোতেই ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।