সোমবার, ০৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৮, ২০২৫, ০৮:০২ এএম

আজ আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস

রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৮, ২০২৫, ০৮:০২ এএম

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

আজ পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস, বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও দিনটি উদযাপিত হচ্ছে জাতীয় ও জেলা পর্যায়ে নানা কর্মসূচির মাধ্যমে। ইউনেসকোর উদ্যোগে ১৯৬৫ সালে প্রবর্তিত এই দিবসটি বিশ্বে প্রথম উদযাপিত হয় ১৯৬৬ সালে। স্বাধীন বাংলাদেশে দিবসটি প্রথম পালিত হয় ১৯৭২ সালে।

এ বছরের আন্তর্জাতিক প্রতিপাদ্য- ‘প্রযুক্তির যুগে সাক্ষরতার প্রসার’- প্রাসঙ্গিকতা পেয়েছে বাংলাদেশের বাস্তবতায়ও। কারণ, বর্তমানে সাক্ষরতার চ্যালেঞ্জ কেবল পড়তে-লিখতে পারার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং তা জড়িত হয়েছে ডিজিটাল দক্ষতা, তথ্য ব্যবহারের যোগ্যতা এবং প্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষায় অংশগ্রহণের সক্ষমতার সঙ্গে।

সাক্ষরতার বর্তমান

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) প্রকাশিত বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সমীক্ষা ২০২৪ অনুযায়ী, দেশের ৭ বছর ও তদূর্ধ্ব জনগোষ্ঠীর মধ্যে সাক্ষরতার হার ৭৭.৯ শতাংশ। অর্থাৎ, এখনও ২২.১ শতাংশ জনগণ নিরক্ষর, যাদের মধ্যে রয়েছে বিদ্যালয়বহির্ভূত শিশু, ঝরে পড়া শিক্ষার্থী ও শিক্ষা থেকে বঞ্চিত প্রাপ্তবয়স্ক নারী-পুরুষ।

গণশিক্ষা উপদেষ্টা বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার জানিয়েছেন, ‘এই হার প্রকৃতপক্ষে আরও কম হতে পারে।’ তার ভাষায়, ‘আগের সরকার প্রকৃত সাক্ষরতার হার চেপে রেখেছিল। স্কুলে গিয়ে দেখা গেছে, অনেক শিক্ষার্থী প্রকৃত সাক্ষর নয়।’

একই সঙ্গে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সরকার ও বেসরকারি সংস্থার পরিসংখ্যানে বড় ধরনের ফারাক রয়েছে, যা দেশের নিরক্ষরতা দূরীকরণকে জটিল করে তুলছে।

দারিদ্র্য ও নিরক্ষরতার সম্পর্ক

দেশে সাক্ষরতার বড় বাধা হয়ে আছে দারিদ্র্য। স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে (১৯৭১) যেখানে সাক্ষরতার হার ছিল মাত্র ১৬.৮ শতাংশ, সেখানে দারিদ্র্য ছিল ৮০ শতাংশ এর বেশি। বর্তমানে দারিদ্র্য কমে দাঁড়িয়েছে ২৮ শতাংশে, আর সাক্ষরতা বেড়ে হয়েছে ৭৭.৯ শতাংশ।

তবে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টার (পিপিআরসি)–এর তথ্যমতে, গত তিন বছরে দেশে দারিদ্র্য বেড়েছে। ২০২২ সালে সরকারি হিসাবে এই হার ছিল ১৮.৭ শতাংশ, যা ২০২৫ সালের মে মাসে এসে দাঁড়িয়েছে প্রায় ২৮ শতাংশ-এ। একই সঙ্গে ৯.৩৫ শতাংশ জনগণ রয়েছে চরম দারিদ্র্যের মধ্যে।

দারিদ্র্যপীড়িত পরিবারগুলোয় সন্তানদের কাজে লাগানো হয়, স্কুলে পাঠানো হয় না, ফলে শিক্ষার সুযোগ হারাচ্ছে লাখ লাখ শিশু।

জেলাভিত্তিক চিত্র: পাহাড়ে বিপর্যয়কর অবস্থা

জরিপ অনুযায়ী, ১৮টি জেলায় এখনো ২৫ শতাংশ এর বেশি মানুষ নিরক্ষর, যার শীর্ষে রয়েছে বান্দরবান জেলা, যেখানে নিরক্ষরতার হার ৬৫.৩ শতাংশ। এছাড়া ময়মনসিংহ বিভাগের জামালপুর, শেরপুর, নেত্রকোনা এবং উত্তরাঞ্চলের কুড়িগ্রামেও চিত্র একইরকম।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এসব অঞ্চলে শিক্ষার মান উন্নয়নে অবকাঠামো, জনবল, উপবৃত্তি এবং কার্যকর পরিকল্পনা জরুরি। বর্তমান উপবৃত্তি ব্যবস্থা মূল্যস্ফীতির তুলনায় অপ্রতুল বলে দাবি তাদের।

শিক্ষার মান নিয়ে উদ্বেগ

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ (বিআইডিএস)–এর গবেষণা বলছে, তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির অনেক শিক্ষার্থী এখনো বাংলা বর্ণ বা সংখ্যা চিনতে পারে না। প্রাথমিক পর্যায়ে শিক্ষার মানহীনতা প্রকৃত সাক্ষরতার অন্তরায় হয়ে উঠেছে।

সাক্ষরতার আন্তর্জাতিক সংজ্ঞা অনুসারে, লিখতে-পড়তে পারা ছাড়াও তথ্য বিশ্লেষণ, গণনা, যোগাযোগ এবং প্রযুক্তি ব্যবহারের দক্ষতাও এর অন্তর্ভুক্ত। এই মানদণ্ডে বিচার করলে দেশের ‘ঘোষিত’ সাক্ষরতার হার প্রকৃত চিত্র নয় বলে মন্তব্য করেন শিক্ষাবিদরা।

প্রধান উপদেষ্টার বার্তা

আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস উপলক্ষে দেওয়া বাণীতে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘বর্তমান প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে টিকে থাকতে হলে কর্মমুখী ও দক্ষতাভিত্তিক শিক্ষার গুরুত্ব অপরিসীম। আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থাকে এমনভাবে গড়ে তুলতে হবে, যেখানে ডিজিটাল দক্ষতা অর্জনের সুযোগ সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘প্রযুক্তিনির্ভর এই আধুনিক পৃথিবীতে যারা তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহারে পিছিয়ে পড়ছে, তারা কেবল শিক্ষাবঞ্চিতই নয়, বরং সমাজ ও অর্থনীতির মূল স্রোত থেকেও বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে।’

এসডিজি অর্জন নিয়ে শঙ্কা

নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের ২০০৮ সালের নির্বাচনি ইশতেহারে ২০১৪ সালের মধ্যে নিরক্ষরতা দূর করার অঙ্গীকার করা হলেও, এক দশক পেরিয়ে গেলেও তা বাস্তবায়িত হয়নি। এখন ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জন নিয়েও শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

Link copied!