ঢাকা মঙ্গলবার, ০৬ মে, ২০২৫

এবার ক্ষেপণাস্ত্রের নতুন দাপট দেখাল ইরান

বিশ্ব ডেস্ক
প্রকাশিত: মে ৫, ২০২৫, ০৮:৪৯ পিএম
ইরানের তৈরি দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ‘কাসেম বাসির’ উৎক্ষেপণ করা হচ্ছে। ছবি : সংগৃহীত

সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা ভেস্তে গেছে ইরানের। অন্যদিকে ইয়েমেনর হুথি বিদ্রোহীদের সমর্থন করায় আন্তর্জাতিক সমালোচনার মুখে পড়েছে তেহরান। এর মধ্যে দূরপাল্লার নতুন ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র উন্মোচন করেছে দেশটি। ইরানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দাবি, ক্ষেপণাস্ত্রটি অন্তত ১২০০ কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতে নির্ভুল আঘাত হানতে সক্ষম।

রোববার (৪ মে) রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বিষয়টি প্রকাশ্যে আনেন দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেনারেল আজিজ নাসিরজাদেহ। নতুন এই ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘কাসেম বাসির’। গত ১৭ এপ্রিল সর্বশেষ পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ করা হয়।

ইউরোপীয়ান টেলিভিশন ইউরোনিউজ জানিয়েছে, ইরানের নতুন উন্মোচিত ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রটি কঠিন জ্বালানিযুক্ত। ‘কাসেম বাসির’ উৎক্ষেপণস্থল থেকে অন্তত ১২০০ কিলোমিটার দূরে লক্ষ্যবস্তুতে নির্ভুল আঘাত হানতে সক্ষম বলে দাবি করেছে তেহরান।

ক্ষেপণাস্ত্রটি মার্কিন প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ‘টার্মিনাল হাই অল্টিটিউড এরিয়া ডিফেন্স (থাড)’ থাড ও রাডার সিস্টেমকে সহজেই ফাঁকি দিতে সক্ষম। এর বডি কার্বন ফাইবার দিয়ে তৈরি হওয়ায় সহজেই রাডার সিস্টেমের নজর এড়িয়ে নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে হামলা করতে পারে।

অ্যাডভ্যান্স লেভেলের গাইডেড প্রযুক্তির ব্যবহার করা হয়েছে। এর রেঞ্জ ১২০০ কিলোমিটার, ‘কাসেম বাসির’কে প্রতিরোধের হার মাত্র ৫ শতাংশ বলে দাবি করেছে ইরান। এছাড়াও জিপিএস ও কোনো ধরনের বিচ্যুতি ছাড়াই সুনির্দিষ্ট হামলা করতে সক্ষম।

হুথি বাহিনীকে সমর্থন করায় ইরান যখন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ে সমালোচনার মধ্যেই নতুন ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের ঘোষণা এলো। সম্প্রতি হুথিরা ইসরায়েলের বেন গুরিয়ন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ। অন্যদিকে ওয়াশিংটনের সঙ্গে তেহরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে উত্তেজনা এখনো চলমান।

তবে ওই সাক্ষাৎকারে ইসরায়েলের প্রধান বিমানবন্দরে হামলা করতে হুথিদের সহায়তা করা অভিযোগ অস্বীকারে করেছেন ইরানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী।

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু হুথি ও তাদের কথিত ইরানি পৃষ্ঠপোষকদের বিরুদ্ধে কঠোর প্রতিশোধ নেওয়ার অঙ্গীকার করেছেন।

নাসিরজাদেহ দাবি করেন, ইয়েমেন একটি স্বাধীন দেশ এবং তারা নিজেদের সিদ্ধান্ত নিজেরাই নিচ্ছে। এরপর তিনি যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন। ইরানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, যদি ইরান আক্রমণের শিকার হয়, তাহলে তারা এই অঞ্চলের (মধ্যপ্রাচ্যে) মার্কিন ঘাঁটিগুলো ‘বৈধ লক্ষ্যবস্তু’ হিসেবে গুঁড়িয়ে দেবে।

এদিকে, ট্রাম্প প্রশাসন চায় তেহরান যেন অস্ত্র-উপযোগী ইউরেনিয়ামের মজুদ না করে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে পরোক্ষ পারমাণবিক আলোচনা ৩ মে রোমে হওয়ার কথা ছিল। তবে, এই আলোচনা এখন স্থগিত করা হয়েছে।