ঢাকা শুক্রবার, ০৯ মে, ২০২৫

দিল্লিতে সর্বোচ্চ সতর্কতা, সীমান্তে ভারত-পাকিস্তান মুখোমুখি

বিশ্ব ডেস্ক
প্রকাশিত: মে ৯, ২০২৫, ১০:৫৫ এএম
ভারতের রাজধানী দিল্লিতে সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। ছবি: সংগৃহীত

ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যকার উত্তেজনা চূড়ান্ত রূপ ধারণ করেছে। ২২ এপ্রিল পেহেলগামে পর্যটক নিহতের ঘটনার পর শুরু হওয়া সংঘাত এখন পরিণত হয়েছে পাল্টাপাল্টি ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলায়। 

বৃহস্পতিবার (৮ মে) এরই পরিপ্রেক্ষিতে ভারতের রাজধানী দিল্লিতে সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে জানানো হয়, নিরাপত্তা বিবেচনায় দিল্লির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্থান ইন্ডিয়া গেট থেকে পর্যটকদের সরে যেতে বলা হয়েছে। পুলিশ মাইকে ঘোষণা দিয়ে এলাকা খালি করে দেয়। একইসঙ্গে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে।

একই রাতে জম্মু ও কাশ্মীরের সীমান্ত অঞ্চলে পাকিস্তান ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে বলে দাবি করেছে ভারতীয় সেনাবাহিনী। বিস্ফোরণের সময় আকাশ আলোকিত হয়ে ওঠে, বাজতে থাকে সাইরেন, এবং অনেক এলাকায় বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।

ভারতের প্রতিরক্ষা বাহিনী জানিয়েছে, জম্মুর সটওয়ারি বিমানঘাঁটি ও আশপাশের সামরিক স্থাপনায় আটটি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হলেও সেগুলো প্রতিহত করা হয়।

অন্যদিকে পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ এসব দাবি অস্বীকার করে বলেন, ভারত মিথ্যা অভিযোগের মাধ্যমে উত্তেজনা বাড়িয়ে তুলছে এবং আলোচনার কোনো সুযোগ দিচ্ছে না। তিনি জানান, পাকিস্তান কখনো লুকিয়ে আক্রমণ চালাবে না এবং আরব বিশ্ব এই সংকট নিরসনে মধ্যস্থতার চেষ্টা চালাচ্ছে।

পাকিস্তানের পক্ষ থেকে আরও দাবি করা হয়েছে, ভারতের ২৫টি ড্রোন তারা ভূপাতিত করেছে। যদিও নয়াদিল্লি এ বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানায়নি।

২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার পর ভারত পাকিস্তানকে দায়ী করে, তবে ইসলামাবাদ তা নাকচ করে দেয়। এর জবাবে ভারত ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামে একটি সামরিক অভিযান চালায়, যাতে পাকিস্তান ও নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের নয়টি স্থানে হামলা চালানো হয়।

পাকিস্তান পাল্টা দাবি করে জানায়, ওই অভিযানের রাতে তারা ভারতের পাঁচটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে, যার মধ্যে তিনটি ছিল রাফাল মডেলের।

পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র আহমেদ শরিফ চৌধুরী জানান, করাচি, লাহোর, রাওয়ালপিন্ডিসহ বিভিন্ন অঞ্চলে ভারতের মোট ২৯টি ড্রোন ধ্বংস করা হয়েছে, যেগুলোর বেশিরভাগ ছিল ইসরায়েলি প্রযুক্তির।

এদিকে, ভারতও দাবি করেছে, পাকিস্তানের লাহোরে একটি আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ধ্বংস করেছে তাদের বাহিনী। যদিও যুদ্ধবিমান হারানোর কথা এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকার করেনি নয়াদিল্লি, তবে যুক্তরাষ্ট্রের দুটি নির্ভরযোগ্য সূত্র বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছে, পাকিস্তান চীনের তৈরি জে-১০ যুদ্ধবিমান দিয়ে ভারতের দুটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে। এর মধ্যে অন্তত একটি ছিল ফ্রান্সের তৈরি রাফাল।

বিবিসি-সহ একাধিক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম পাকিস্তানে রাফাল যুদ্ধবিমানের ধ্বংসাবশেষ সরানোর ছবি সংগ্রহ করেছে। যদিও ওই বিমানের উৎস দেশ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

দুই দেশের পাল্টাপাল্টি হামলা ও দাবি-প্রতিদাবির প্রেক্ষিতে দক্ষিণ এশিয়ায় যুদ্ধ পরিস্থিতি ক্রমেই ঘনীভূত হচ্ছে, যা বৈশ্বিক স্থিতিশীলতার জন্যও এক বড় হুমকি হিসেবে দেখা দিচ্ছে।