লিবিয়ার রাজধানীতে বন্দুকধারীদের মধ্যে পুনরায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সোমবার (১২ মে) ক্ষমতাধর সামরিক নেতাকে হত্যার জেরে এ সংঘর্ষ হয়।
এ ঘটনার পরই জরুরি অবস্থা জারি করেছে লিবিয়া কর্তৃপক্ষ। একই সঙ্গ জাতিসংঘ মিশন থেকে উত্তেজনা হ্রাসের আহ্বান জানানো হয়।
এদিন উত্তর আফ্রিকার দেশটির স্থানীয় সময় রাত ৯টার দিকে সংঘর্ষ শুরু হওয়ার পর লিবিয়ায় জাতিসংঘের মিশন উত্তেজনা হ্রাসের আহ্বান জানিয়েছে।
এক্স হ্যান্ডেলে দেওয়া এক পোস্টে লিবিয়ায় জাতিসংঘের সহায়তা মিশন (ইউএনএসএমআইএল) জানায়, ঘনবসতিপূর্ণ বেসামরিক এলাকায় ভারী অস্ত্রের তীব্র লড়াইয়ে তারা শঙ্কিত। বেসামরিক নাগরিক রক্ষার বাধ্যবাধকতা স্মরণ করিয়ে সব পক্ষকে অবিলম্বে যুদ্ধ বন্ধ করে শান্তি ফিরিয়ে আনার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘের সংস্থাটি।
এ ছাড়াও বেসামরিক ব্যক্তি ও স্থাপনায় হামলা যুদ্ধাপরাধের শামিল হতে পারে বলেও উল্লেখ করেছে সংস্থাটি।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, অন্যতম শক্তিশালী সশস্ত্র গোষ্ঠী সাপোর্ট ফোর্স অ্যাপারেটাসের (এসএসএ) একজন জ্যেষ্ঠ কমান্ডার আব্দেল ঘানি আল-কিকলি নিহত হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে রাজধানী ত্রিপোলিতে গুলির শব্দ শোনা গেছে।
এসএসএ হলো প্রেসিডেন্ট পরিষদের সঙ্গে সম্পর্কিত একটি রাষ্ট্র-সমর্থিত নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠান।
দীর্ঘকালীন স্বৈরশাসক মোয়াম্মার গাদ্দাফিকে ২০১১ সালে উৎখাত করার পর থেকে লিবিয়া রাজনৈতিক সংঘাতে জড়িয়ে পড়েছে, যার ফলে বেশ কয়েকটি সশস্ত্র গোষ্ঠীর উত্থান ঘটে।
২০২০ সালের যুদ্ধবিরতি কিছুটা শান্তি এনে দিলেও দেশটি এখনো ভঙ্গুর ও বিভক্ত। আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত জাতীয় ঐক্য সরকার (জিএনইউ) ত্রিপোলি এবং উত্তর-পশ্চিমে এবং পূর্বে বেনগাজিতে জাতীয় স্থিতিশীলতা সরকার ক্ষমতায় রয়েছে।
লিবিয়ার তেল ও গ্যাস মজুদের ওপর নিয়ন্ত্রণ দখলের জন্য প্রধান গোষ্ঠীগুলোর সশস্ত্র সংঘর্ষের খবর পাওয়া যায় মাঝেমধ্যে।
জাতীয় ঐক্য সরকার (জিএনইউ) তাদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের পোস্ট দিয়ে জানায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় স্থানীয় হাসপাতাল ও মেডিকেল সেন্টারগুলোকে জরুরি অবস্থার জন্য প্রস্তুত থাকতে বলেছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, জাতীয় ঐক্য সরকারের (জিএনইউ) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একটি সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে নাগরিকদের ‘নিজের নিরাপত্তার জন্য’ বাড়িতে থাকার আহ্বান জানিয়েছে।
ফেসবুকে ত্রিপোলি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সমস্ত পড়াশোনা, পরীক্ষা ও প্রশাসনিক কাজ স্থগিত রাখার ঘোষণাও দিয়েছে।
ট্রাম্প প্রশাসন অভিবাসীদের যুক্তরাষ্ট্র থেকে লিবিয়ায় ফেরত পাঠানোর পরিকল্পনার মধ্যেই দেখা দেয় সর্বশেষ অস্থিরতা।
সিএনএন প্রথম প্রতিবেদনে জানিয়েছিল, ট্রাম্প প্রশাসন লিবিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করছে, যাতে দেশটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে অভিবাসীদের নিয়ে যেতে পারে।প্রশাসন এ পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছিল বলে মনে হচ্ছে। সম্প্রতি বুধবার যখন লিবিয়ায় যাওয়ার পথে বাসে অপেক্ষারত অভিবাসীদের হঠাৎ করে আটক কেন্দ্রে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছিল।
হোয়াইট হাউস এই বিমান পরিকল্পনা সম্পর্কে মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।
আপনার মতামত লিখুন :