ঢাকা বুধবার, ১০ ডিসেম্বর, ২০২৫

ইউক্রেনে নির্বাচন আয়োজনে প্রস্তুত জেলেনস্কি

বিশ্ব ডেস্ক
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১০, ২০২৫, ০৩:৪৯ পিএম
ভলোদিমির জেলেনস্কি। ছবি- সংগৃহীত

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, রাশিয়া থেকে চলমান আক্রমণের মধ্যেই দেশ নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত। তবে যুদ্ধের কারণে ভোট আয়োজনের পথে রয়েছে বড় চ্যালেঞ্জ।

জেলেনস্কির পাঁচ বছরের প্রেসিডেন্ট মেয়াদ মে ২০২৪-এ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও, রাশিয়ার পূর্ণমাত্রার আগ্রাসনের পর সামরিক আইন জারির কারণে নির্বাচন স্থগিত রাখা হয়েছে।

একটি সাংবাদিক সম্মেলনে জেলেনস্কি জোর দিয়ে বলেন, তিনি চান যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় সহযোগীদের সহায়তায় ভোটের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হোক। তিনি মন্তব্য করেন, সুরক্ষা নিশ্চিত করা গেলে ৬০ থেকে ৯০ দিনের মধ্যেই নির্বাচন আয়োজন সম্ভব।

জেলেনস্কি বলেন, নির্বাচনের বিষয়টি হলো ‘প্রথম ও প্রধানত আমাদের জনগণের ব্যাপার, অন্য দেশের নাগরিকদের প্রশ্ন নয়।’

ট্রাম্পের দাবি প্রত্যাখ্যান

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি অভিযোগ করেন, ইউক্রেন যুদ্ধকে ভোট এড়িয়ে যাওয়ার জন্য ব্যবহার করছে। জেলেনস্কি এই মন্তব্যকে ‘ভিত্তিহীন’ হিসেবে প্রত্যাখ্যান করেছেন।

তিনি বলেন, কিছু মানুষ ভাবছে আমরা ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য যুদ্ধ চালাচ্ছি...এটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বক্তব্য।

নির্বাচন আয়োজনে মূল বাধা

১/ সৈন্যদের ভোট: সামনের সারিতে থাকা সৈন্যরা ভোট দিতে সক্ষম নাও হতে পারেন।

২/ শরণার্থী: প্রায় ৫.৭ মিলিয়ন ইউক্রেনীয় বর্তমানে বিদেশে বসবাস করছেন, যাদের ভোট দেওয়ার ব্যবস্থা কঠিন।

৩/ নিরাপত্তা: সামরিক হামলায় আক্রান্ত এলাকায় ভোট আয়োজনের জন্য অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থার প্রয়োজন।

৪/ রাজনৈতিক ঐক্য: একজন বিরোধী সাংসদ লেসিয়া ভাসিলেনকো বলেছেন, নিরাপত্তা নিশ্চিত না হলে নির্বাচনের ন্যায্যতা নেই। তিনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় যুক্তরাজ্যের ভোট স্থগিত রাখার উদাহরণ দেন।

অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক সমঝোতা

ইউক্রেনের সংসদ সদস্য ও বিদেশনীতি কমিটির চেয়ারম্যান ওলেক্সান্দ্র মেরেজকো বলেছেন, যুদ্ধ চলাকালীন সামরিক আইন থাকা অবস্থায় ভোট হবে না, এই বিষয়ে দেশের সব রাজনৈতিক দল ও নাগরিক সংগঠনের মধ্যে শক্ত সমঝোতা রয়েছে।

মেরেজকো আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, নির্বাচনের সুযোগ ব্যবহার করে ভোট প্রচারণার মাধ্যমে দেশকে বিভাজিত করার চেষ্টা করতে পারেন পুতিন।

কিয়েভ ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব সোসিওলজি (KIIS)-এর একটি জরিপে দেখা গেছে, মার্চ মাসে ৭৮% মানুষ চেয়েছিলেন ভোট কেবল নিরাপত্তা নিশ্চিত ও সম্পূর্ণ শান্তি নিশ্চিত হলে অনুষ্ঠিত হোক।

সেপ্টেম্বরের জরিপে সংখ্যাটি কমে ৬৩% এবং ২২% ভোট দিতে চেয়েছেন যুদ্ধবিরতি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত হলে।

উল্লেখযোগ্য, জেলেনস্কি আগেও বলেছেন, যদি পরিস্থিতি অনুমতি দেয়, নির্বাচন আয়োজনের জন্য আমি প্রস্তুত। তবে, সৈন্য ও শরণার্থী সংখ্যা, নিরাপত্তাহীন এলাকা ও চলমান ধর্মঘট-এর কারণে ভোট আয়োজনের শর্ত পূরণ করা কঠিন।