মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র রাষ্ট্রগুলোর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে ‘নতুন গোপন অস্ত্র’ তৈরি করেছে পূর্ব এশিয়ার দেশ উত্তর কোরিয়া। একই সঙ্গে প্রতিরক্ষা বিজ্ঞানেও উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সাধন করেছে বলে দাবি করেছেন দেশটির নেতা কিম জং-উন।
সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা কেসিএনএ-এ দেওয়া ভাষণে এই মন্তব্য করেন তিনি।
কিম জং-উন বলেন, পিয়ংইয়ংকে সব ধরনের সামরিক হুমকি প্রতিহত করতে সক্ষম আরও শক্তিশালী বাহিনী ধারাবাহিকভাবে মজুদ রাখতে হবে। তিনি যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের ‘উসকানিমূলক পদক্ষেপ’ অঞ্চলকে অস্থিতিশীল করছে এবং উত্তর কোরিয়ার নিরাপত্তা উদ্বেগকে উপেক্ষা করছে বলে অভিযোগ করেছেন।
তিনি বলেন, অনুভূত হুমকি মোকাবিলায় উত্তর কোরিয়া ‘নতুন গোপন অস্ত্র’ অর্জন করেছে এবং প্রতিরক্ষা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে বহু গবেষণামূলক সাফল্য এসেছে, তবে এসব সাফল্যের বিস্তারিত কোনো তথ্য প্রকাশ করেননি।
কিম দাবি করেন, পিয়ংইয়ং সামুদ্রিক সার্বভৌমত্ব রক্ষায় ‘বিভিন্ন সামুদ্রিক সামরিক মিশন সম্পাদনে সক্ষম’ ডেস্ট্রয়ার নির্মাণ করে একটি কৌশলগত অক্ষ গড়ে তুলেছে। তিনি সামুদ্রিক সক্ষমতার প্রসঙ্গে সংক্ষিপ্ত ইঙ্গিত দিলেও বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেননি।
চলতি মাসের শুরুতে উত্তর কোরিয়ার পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল যে তারা হোয়াসং-২০ আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের জন্য তৈরি একটি কঠিন জ্বালানি ইঞ্জিনের চূড়ান্ত স্থল পরীক্ষা সম্পন্ন করেছে, যা তত্ত্বগতভাবে মহাদেশীয় মার্কিন ভূখণ্ডে আঘাত হানার সক্ষমতা দিতে পারে।
গত সপ্তাহে কিম কুমসং নামে পরিচিত কৌশলগত আক্রমণাত্মক ড্রোন ও একটি মনুষ্যবিহীন কৌশলগত গোয়েন্দা বিমানের পরীক্ষাও পিয়ংইয়ং থেকে চালানো হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। মার্চে তিনি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে নিয়ন্ত্রিত ‘আত্মঘাতী ড্রোন’ পরীক্ষাও পর্যবেক্ষণ করেছিলেন।
কিম তার ভাষণে ‘পর্যায়ক্রমে পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ’ ধারণারও সমালোচনা করেন এবং জোর দিয়ে বলেন, ‘আমরা কখনই আমাদের পারমাণবিক অস্ত্র ত্যাগ করব না’। তিনি আরও বলেন, উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক অবস্থা একটি ‘জাতীয় আইন’ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত।
তবুও কিম যুক্তিসংগত কণ্ঠে উল্লেখ করেন, যদি আমেরিকা তার পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণের প্রতি ‘নিরর্থক আবেগ’ ত্যাগ করে এবং বাস্তবতা মেনে নেয়, তাহলে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক গড়ে তোলার সুযোগ থাকতে পারে বলেও জানান তিনি।