ঢাকা মঙ্গলবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

মাদুরোর ইউটিউব চ্যানেল গায়েব

বিশ্ব ডেস্ক
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২২, ২০২৫, ১১:৩৮ পিএম
ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো। ছবি- সংগৃহীত

ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর অফিসিয়াল ইউটিউব চ্যানেল হঠাৎ করেই প্ল্যাটফর্ম থেকে উধাও হয়ে গেছে। কারাকাস ও ওয়াশিংটনের মধ্যে চলমান উত্তেজনার মধ্যেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হলো।

রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যম টেলিসুরের তথ্য অনুযায়ী, শুক্রবার চ্যানেলটি অফলাইনে চলে যায়। এরপর থেকে এটি ইউটিউবের অনুসন্ধান তালিকা থেকেও অদৃশ্য হয়েছে। সরাসরি লিংক দিয়েও আর প্রবেশ করা যাচ্ছে না। বর্তমানে যেখানে চ্যানেলটি ছিল, সেখানে কেবল দেখা যাচ্ছে ‘এই পৃষ্ঠাটি অনুপলব্ধ’।

ইউটিউবের মূল প্রতিষ্ঠান যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গুগল এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।

তবে প্ল্যাটফর্মটির নীতিমালা অনুযায়ী, ভুয়া তথ্য, ঘৃণাত্মক বক্তব্য কিংবা ‘গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ’-এর মতো নিয়ম বারবার ভঙ্গ করলে চ্যানেল মুছে ফেলা হতে পারে। মাদুরোর চ্যানেলের গ্রাহক সংখ্যা ছিল ২ লাখ ৩৩ হাজারেরও বেশি। সেখানে মূলত তার বক্তৃতা ও সাপ্তাহিক টেলিভিশন অনুষ্ঠান প্রচারিত হতো। কারাকাস এখনও এ বিষয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি।

এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র-ভেনেজুয়েলা সম্পর্কের টানাপোড়েন আরও প্রকট হয়েছে। ওয়াশিংটন মাদুরোর পুনর্নির্বাচনকে স্বীকৃতি দিতে অস্বীকার করায় দীর্ঘদিন ধরেই সম্পর্ক খারাপ। সম্প্রতি দক্ষিণ ক্যারিবীয় অঞ্চলে মার্কিন যুদ্ধজাহাজ ও যুদ্ধবিমান মোতায়েনের পর উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে।

গত মাসে যুক্তরাষ্ট্র অন্তত আটটি নৌযান, একটি আক্রমণাত্মক সাবমেরিন ও প্রায় চার হাজার সেনা ভেনেজুয়েলার উপকূলের কাছে পাঠায়। ওয়াশিংটনের দাবি ছিল, এই অভিযান মাদক কার্টেল দমনের জন্য। তাদের অভিযানে ভেনেজুয়েলার তিনটি নৌকা ডুবানো হয়েছে। তবে যারা ওই নৌকায় ছিল তাদের অপরাধী প্রমাণে কোনো তথ্য উপস্থাপন করেনি।

ভেনেজুয়েলার কর্মকর্তারা এই পদক্ষেপকে দেশের সার্বভৌমত্বে হস্তক্ষেপ এবং মাদুরো সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র বলে নিন্দা জানিয়েছেন। এ প্রেক্ষাপটে চলতি মাসের শুরুতে মাদুরো মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে চিঠি পাঠান। তাতে তিনি দাবি করেন, ভেনেজুয়েলা ইতোমধ্যেই পাচারকারী নেটওয়ার্ক ও বড় বড় মাদকচক্র ভেঙে দিয়েছে। বিপরীত সংবাদগুলোকে তিনি ‘ভুয়া খবর’ আখ্যা দিয়ে এই বিষয়ে সরাসরি আলোচনার প্রস্তাব দেন।

চিঠিতে মাদুরো লেখেন, ‘প্রেসিডেন্ট, আমি আশা করি আমরা একসঙ্গে সেই মিথ্যাচারগুলো পরাজিত করতে পারব, যা আমাদের ঐতিহাসিক ও শান্তিপূর্ণ সম্পর্ককে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।’ ভেনেজুয়েলার ভাইস প্রেসিডেন্ট ডেলসি রদ্রিগেজ টেলিগ্রামে ওই চিঠির অংশ প্রকাশ করেন।

অন্যদিকে, ট্রাম্প জানিয়েছেন যে তিনি ভেনেজুয়েলায় শাসন পরিবর্তনের পক্ষপাতী নন, তবে মাদকচক্রের বিরুদ্ধে শক্ত পদক্ষেপের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেননি। গত মাসেই তার প্রশাসন মাদুরোর গ্রেপ্তারের পুরস্কার দ্বিগুণ করে ৫০ মিলিয়ন ডলার ঘোষণা করে। নিউইয়র্কে ২০২০ সালের একটি মামলায় কোকেন পাচারের ষড়যন্ত্রের অভিযোগ আনা হয়েছিল মাদুরোর বিরুদ্ধে। তবে মাদুরো অভিযোগগুলোকে ‘অভ্যুত্থানের ষড়যন্ত্র’ হিসেবে উড়িয়ে দেন।

২১ সেপ্টেম্বর মাদুরোর পাঠানো চিঠি সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে ট্রাম্প বলেন, তিনি চিঠি পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করবেন না। তবে তিনি বলেন, ‘আমরা দেখব ভেনেজুয়েলার সঙ্গে কী হয়’।

সূত্র: এপি, আল-জাজিরা, আরটি