পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখাওয়ায় ভয়াবহ বিমান হামলা চালিয়েছে দেশটির বিমানবাহিনী। এতে নারী ও শিশুসহ অন্তত ৩০ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) রাত আড়াইটার দিকে খাইবার জেলার তিরাহ উপত্যকার মাতরে দারা গ্রামে এ হামলা হয়।
দেশটির প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম দ্য ডনের প্রতিবেদনে বলা হয়, নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি)-এর আস্তানা লক্ষ্য করে পাকিস্তানি যুদ্ধবিমানগুলো আটটি এলএস-৬ বোমা নিক্ষেপ করে। তবে হামলায় প্রাণ হারান কেবল বেসামরিক মানুষজন। নিহতদের মধ্যে বহু নারী ও শিশু রয়েছে।
স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, হামলায় বহু মানুষ আহত হয়েছেন, তবে তাদের সঠিক সংখ্যা ও অবস্থা তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ছবি ও ভিডিওতে শিশুদের মরদেহসহ বহু মৃতদেহ ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকতে দেখা গেছে। ধ্বংসস্তূপের নিচে আরও মরদেহ থাকার আশঙ্কায় উদ্ধারকর্মীরা তল্লাশি চালাচ্ছেন। ফলে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
খাইবার পাখতুনখাওয়ায় অতীতে বহু সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান চালানো হয়েছে। এসব অভিযানে বহু বেসামরিক প্রাণহানির ঘটনাও ঘটেছে। চলতি বছরের জুনে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল জানিয়েছিল, এ ধরনের ড্রোন ও বিমান হামলা পাকিস্তানে বেসামরিক জীবনের প্রতি ভয়াবহ অবজ্ঞার প্রতিফলন।
ডনের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত খাইবার পাখতুনখাওয়ায় ৬০৫টি সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে। এসব ঘটনায় অন্তত ১৩৮ জন বেসামরিক এবং ৭৯ জন পুলিশ নিহত হয়েছেন। শুধু আগস্টেই নথিভুক্ত হয়েছে ১২৯টি হামলা, যাতে ছয়জন সেনা ও আধা সামরিক ফেডারেল কনস্টাবুলারি সদস্য নিহত হন।
এ ঘটনার পর সোমবার এক বিবৃতিতে পাকিস্তান মানবাধিকার কমিশন (এইচআরসিপি) গভীর উদ্বেগ জানায়। বিবৃতিতে বলা হয়, তিরাহ এলাকায় বিমান হামলায় বহু বেসামরিক নিহত হওয়ার ঘটনায় তারা মর্মাহত এবং এ বিষয়ে অবিলম্বে তদন্তের দাবি জানায়।
তবে পাকিস্তান সরকার বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো বিবৃতি দেয়নি বা বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করেনি।