শনিবার, ০৮ নভেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: নভেম্বর ৮, ২০২৫, ১২:০০ এএম

বললেন ফখরুল ইসলাম

আগে গণভোট দাবি নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র

রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: নভেম্বর ৮, ২০২৫, ১২:০০ এএম

আগে গণভোট দাবি নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র

জামায়াতে ইসলামীসহ সমমনা আটটি দলের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে গণভোটের দাবিকে ‘নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গতকাল শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে শোভাযাত্রা-পূর্ববর্তী সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন। ৭ নভেম্বর ‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ উপলক্ষে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটি এই সমাবেশ ও শোভাযাত্রার আয়োজন করে। এখানে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ঐকমত্যের বাইরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। ঢাকায় বসে জোর করে বিএনপি কিংবা কারও ওপর চাপ সৃষ্টি করা যাবে না। একই সভায় স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস আরও বলেন, বিএনপির ষড়যন্ত্রের কোনো ইতিহাস নাই। পেছনে দরজা দিয়ে ক্ষমতায় যাওয়ার কোনো ইতিহাস নাই।

এদিন শোভাযাত্রার আগে সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, একটা রাজনৈতিক দল কয়েকটি দল নিয়ে জোট বানিয়েছে। তারা নির্বাচনের আগেই গণভোট দিতে সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে। গণভোট জাতীয় নির্বাচনের দিনই হতে হবেÑ বিএনপির এই মত তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, দুটি ভোট আলাদা করতে গেলে অনেক টাকা খরচ হবে। যারা নির্বাচনের আগে গণভোট চাইছে, তারা এর মাধ্যমে নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র করছে। মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপি স্পষ্ট করে জানিয়েছে যে গণভোট হলে নির্বাচনের দিনই হতে হবে। আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হতে হবে। তা না হলে দেশের জনগণ সেটি মানবে না।

সমাবেশ শেষে বিএনপি মহাসচিবের নেতৃত্বে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে একটি শোভাযাত্রা বের হয়। সেটি কাকরাইল থেকে মালিবাগ, মগবাজার, বাংলামোটর হয়ে কারওয়ান বাজার মোড়ে এসে শেষ হয়।

শোভাযাত্রায় দলের মহাসচিব, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, আবদুল মঈন খানসহ কেন্দ্রীয় ও অঙ্গসংগঠনের হাজার হাজার নেতাকর্মী অংশগ্রহণ করেন।

সংক্ষিপ্ত সমাবেশে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘৭ নভেম্বরের চেতনা গণতন্ত্রের চেতনা, আমাদের বিএনপির জন্ম হয়েছে সংস্কারের মধ্য দিয়ে। আমাদের নেতা প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান সংস্কারের সূচনা করেছেন; আর আজ তারেক রহমান নতুন সংস্কারের ৩১ দফা দিয়ে জাতিকে সামনে এগিয়ে দেওয়ার একটা ম্যাগনাকার্টা দিয়েছেন। আমরা সেই লক্ষ্যে এগিয়ে যাব, আমরা এই নির্বাচনে অংশ নেব। ইনশাআল্লাহ এই নির্বাচনে জয়যুক্ত হয়ে আমরা একটা নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলব।’

তাহলে ৭ মাস ঐকমত্যের আলোচনার কী হলো: গণভোট নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের সিদ্ধান্ত এবং কয়েকটি দলের দাবির প্রসঙ্গ টেনে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা দেখলাম হঠাৎ করে উপদেষ্টা পরিষদের একজন সদস্য সংবাদ সম্মেলন করে বললেন, তাদের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত হয়েছে, সাত দিন সময় দেওয়া হবে রাজনৈতিক দলগুলোকে। তারা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে। তাহলে এতদিন ধরে, সাত মাস ধরে যে জাতীয় সনদে স্বাক্ষর করার জন্য ঐকমত্য কমিশন বসল, সমস্ত সংস্কারের প্রস্তাব নিয়ে আলাপ-আলোচনা করল, সেটা কীভাবে হলো? অসংখ্য টাকা খরচ করে আপনারা যেটা করলেন, সেটায় রাজনৈতিক দলগুলোর কোনো সমাধান হয়নি।’

জুলাই সনদ বাস্তবায়ন প্রশ্নে সংসদ নির্বাচনের আগে নভেম্বরেই গণভোটের দাবি তুলেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীসহ ধর্মভিত্তিক আটটি দল। কিন্তু কেন গণভোট আগে হতে হবে, সেই প্রশ্ন তুলে ফখরুল বলেন, ‘একটা রাজনৈতিক দল কয়েকটা দলকে নিয়ে জোট বানিয়েছে, তারা চাপ সৃষ্টি করছে বিভিন্নভাবে যে নির্বাচনের আগেই গণভোট হতে হবে। কেন নির্বাচনের আগে গণভোট হতে হবে? আমরা বলেছি, আমরা গণভোট মানছি, সেই গণভোট নির্বাচনের দিনই হতে হবে। কারণ দুটো ভোট করতে গেলে অনেক টাকা খরচ হবে। তা ছাড়া মূল যে নির্বাচন জাতীয় নির্বাচন, সেটা ক্ষুণœ হয়ে যাবে।’

ঐকমত্যের বাইরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই মন্তব্য করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, ঢাকায় বসে জোর করে বিএনপি কিংবা কারও ওপর চাপ সৃষ্টি করা যাবে না। তিনি বলেন, ‘ইতিমধ্যে দীর্ঘ আলোচনার মাধ্যমে ঐকমত্য হয়েছে। ঐকমত্যের পরিপ্রেক্ষিতে সনদ সই হয়েছে। এর বাইরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। গণতন্ত্রে যদি বিশ্বাস করেন, আগামী নির্বাচনে আপনার ম্যান্ডেটের জন্য জনগণের কাছে যান। ওই ঢাকায় বসে জোর করে আপনার দাবি আদায়ের জন্য বিএনপি কিংবা আর কারও ওপর চাপ সৃষ্টি করবেন না। ঢাকায় বসে কিছু মানুষ জোর করে আগামী সংসদে কারা যাবে তারা বলে দেওয়ার চেষ্টা করছে।’ যারা নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করতে চাইছে, তাদের সম্পর্কে নেতাকর্মীদের চোখ-কান খোলা রাখার আহ্বান জানিয়ে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘নির্বাচন ছাড়া যদি মজা খাওয়া যায়, তাহলে নির্বাচন কেন চাইবেন? এটা কি আমরা বুঝি না? এই খাওয়া খাইতে দেব না। শত্রুদের যেখানে দেখবেন, পুলিশের হাতে তুলে দেবেন। এরা আমাদের মধ্যে ঘোরাফেরা করছে।’

আমীর খসরু বলেন, ‘৭ নভেম্বর সমস্ত জাতি ঐক্যবদ্ধভাবে গণতন্ত্র ও বাংলাদেশের শত্রুদের মোকাবিলা করেছে। যারা গণতন্ত্রকে বাধাগ্রস্ত করতে চায়, যারা জনগণের নির্বাচনকে বিলম্বিত করতে চায়, তাদের বুঝিয়ে দিতে হবে নির্বাচনের মাধ্যমে এই দেশের মালিকানা হবে। মালিকানা নিশ্চিত হবে নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের মাধ্যমে।’

এই সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, ধর্মের ব্যবসা করা একটি দল বলছে, একটি বৃহৎ দল গণতন্ত্র নিয়ে ষড়যন্ত্র করছে। যারা এ কথা বলছে, তারা স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব নিয়ে ষড়যন্ত্র করছে। তিনি বলেন, এই দেশের স্বাধীনতা বিএনপি নেতা শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান সাহেবের নেতৃত্বে হয়েছিল। ৭ নভেম্বর, আপনারা দিনটিকে অশ্রদ্ধা জানিয়েছেন, এই দিন নিয়ে কোনো কথা বলছেন না। বলছেন, একটি বৃহত্তর দল ষড়যন্ত্র করছে। বিএনপির ষড়যন্ত্রের কোনো ইতিহাস নাই। পেছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় যাওয়ার কোনো ইতিহাস নাই, বরং আপনারা বারবার চেষ্টা করেছেন ১৯৪৭ সাল থেকে। সেই সময় স্বাধীনতা আন্দোলন আপনারা করেন নাই, জনগণের বিরুদ্ধে গিয়েছেন। একাত্তর সালে জনগণের বিরুদ্ধে গিয়েছেন। এখনো জনগণের বিরুদ্ধে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। তিনি বলেন, ‘বিএনপি কিছুদিন যাবৎ খুব শান্ত, সভ্য, ভদ্র হিসেবে...আমরা বলেছিলাম এই সরকারকে সহযোগিতা করব। আমরা বরাবর সহযোগিতা করে যাচ্ছি। আপনারা যদি আমাদের এই নম্রতাকে, এই ভদ্রতাকে দুর্বলতা ভেবে থাকেন, বোকার স্বর্গে বসবাস করছেন। বিএনপি যদি মাঠে নামে, আপনাদের ট্যাবলেট খাওয়ার জন্য খুঁজে পাওয়া যাবে না।’ জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন প্রসঙ্গে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘অনেকে লম্বা লম্বা কথা বলেছেন সনদ নিয়ে। আমরা বারবার এটাকে মানতে চেয়েছি, কিন্তু আপনারা একটা না একটা খুঁত ধরছেন এবং এটা নষ্ট করার চেষ্টা করছেন। এই সমস্ত অপকর্ম বাদ দেন। বিগত দিনের ইতিহাস দেখে নেন, আপনারা ক্ষমা চান। এখনো সময় আছে, জাতিকে আর বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করবেন না।’

বিএনপি মহাসচিবের সভাপতিত্বে এবং প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাহউদ্দিন টুকুর সঞ্চালনায় সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান, মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক রফিকুল আলম মজনু ও উত্তরের আহ্বায়ক আমিনুল হক বক্তব্য দেন।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!