বৃহস্পতিবার, ০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৪, ২০২৫, ০৩:২০ এএম

পৃথিবীর তুলনায় দ্রুত এগোয় মঙ্গলের সময়

রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৪, ২০২৫, ০৩:২০ এএম

পৃথিবীর তুলনায় দ্রুত  এগোয় মঙ্গলের সময়

মানব জাতি যখন ভবিষ্যতের অভিযানের জন্য মঙ্গল গ্রহের দিকে তাকিয়ে আছে, ঠিক তখনই বিজ্ঞানীরা একটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উদঘাটন করেছেন। মঙ্গলে সময় পৃথিবীর তুলনায় দ্রুত গতিতে এগোয়। এই আবিষ্কার ভবিষ্যৎ মহাকাশ যোগাযোগ, নেভিগেশন এমনকি গ্রহান্তর প্রযুক্তির জন্যও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে বলে মনে করছেন মহাকাশ বিজ্ঞানীরা।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেকনোলজির পদার্থবিদরা হিসাব করে দেখেছেন, মঙ্গলের ঘড়ি প্রতিদিন গড়ে পৃথিবীর ঘড়ির তুলনায় ৪৭৭ মাইক্রোসেকেন্ড দ্রুত এগোয়। এর প্রধান কারণ গ্রহটির তুলনামূলকভাবে দুর্বল মাধ্যাকর্ষণ বল এবং তার অনন্য কক্ষপথ। পৃথিবীর তুলনায় মঙ্গলের মাধ্যাকর্ষণ প্রায় পাঁচ গুণ দুর্বল, যার ফলে সময়ের গতি সামান্য হলেও পরিবর্তিত হয়।

আরও বিস্ময়কর তথ্য হলো মঙ্গলের উচ্চমাত্রার উপবৃত্তাকার কক্ষপথ এবং পাশর্^বর্তী গ্রহগুলোর মহাকর্ষীয় প্রভাব মিলে এই সময়-বিভ্রাটে অতিরিক্ত ওঠানামা তৈরি করে। গবেষণায় দেখা গেছে, মঙ্গলের বছরের বিভিন্ন সময়ে ঘড়ির এই পরিবর্তন দিনে সর্বোচ্চ ২২৬ মাইক্রোসেকেন্ড পর্যন্ত হতে পারে। এর ফলে পৃথিবী ও মঙ্গলের সময়কে একত্রে সমন্বয় করা চাঁদের তুলনায় অনেক বেশি কঠিন হয়ে দাঁড়ায়।

গবেষণাটি প্রকাশিত হয়েছে দ্য অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল জার্নালে। গবেষক বিজুনাথ পাটলা বলেন, ‘চাঁদ ও মঙ্গলের জন্য সময় এখন একেবারে তৈরি। আমরা প্রথমবারের মতো সত্যিকারের আন্তঃগ্রহ সময়ের ধারণা বুঝতে পারছি। বিজ্ঞান কল্পকাহিনির মতো সৌরজগৎজুড়ে মানব বিস্তারের স্বপ্ন এখন আগের চেয়ে বাস্তবের কাছাকাছি।’

গবেষক দলের মতে, সঠিক সময় নির্ধারণের জন্য শুধু মঙ্গলের মাধ্যাকর্ষণ নয়; সূর্য, পৃথিবী, চাঁদ এবং অন্যান্য গ্রহের আকর্ষণ বলকেও বিবেচনায় নিতে হয়েছে। পাটলা বলেন, ‘তিন-পি- সমস্যা যেমন কঠিন, এখানে আমরা চারটি পি- নিয়ে কাজ করছিÑ সূর্য, পৃথিবী, চাঁদ ও মঙ্গল। স্বাভাবিকভাবেই হিসাব জটিল।’

গবেষণায় আরও বলা হয়েছে, যদি পৃথিবীর একটি অত্যাধুনিক অ্যাটমিক ক্লক মঙ্গলে নিয়ে যাওয়া হয়, তা স্বাভাবিকভাবেই টিকবে। কিন্তু পৃথিবীর ঘড়ির সঙ্গে পাশাপাশি রাখলে ধীরে ধীরে দুটো ঘড়ির সময়ে পার্থক্য স্পষ্ট হতে শুরু করবেÑ যেন গ্রহগত ‘টাইম জোন’, তবে এর পেছনে রয়েছে আইনস্টাইনের আপেক্ষিকতার তত্ত্ব।

এই ক্ষুদ্র সময় বিভ্রাট ভবিষ্যতের প্রযুক্তির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিজুনাথ পাটলা বলেন, ‘যদি দুই গ্রহের মধ্যে নিখুঁত সিংক্রেনাইজেশন তৈরি করা যায়, তা হলে প্রায় রিয়েল-টাইম যোগাযোগ সম্ভব হবে, কোনো তথ্য বিকৃতি ছাড়াই।’ মাইক্রোসেকেন্ড মাত্রার এ পার্থক্যও ভবিষ্যৎ যোগাযোগ ব্যবস্থায় বড় ভূমিকা রাখতে পারে।

যদিও পুরোপুরি নির্বিঘœ মঙ্গল-পৃথিবী যোগাযোগব্যবস্থা গড়ে উঠতে এখনো বহু বছর লাগবে, তবু নেভিগেশনব্যবস্থা তৈরির প্রস্তুতি এখন থেকেই জরুরি বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। পদার্থবিজ্ঞানী নীল অ্যাশবি বলেন, ‘জিপিএসের মতো ভবিষ্যৎ আন্তঃগ্রহ নেভিগেশন সিস্টেম নির্ভর করবে অত্যন্ত নির্ভুল ঘড়ির ওপর, যেগুলোর সময়-হিসাব গঠন হবে আপেক্ষিকতার তত্ত্ব অনুযায়ী।’

পাটলা আরও বলেন, ‘মঙ্গলে সময় কীভাবে চলে, তা প্রথমবারের মতো সঠিকভাবে বোঝা গেল। এটি শুধু প্রযুক্তিগত নয়, মৌলিক বিজ্ঞানের দিক থেকেও এক বিশাল অগ্রগতি। সময়ের প্রবাহ কীভাবে কাজ করে এবং কোন কোন প্রভাব তাকে বদলে দেয়Ñ এটি অধ্যয়নের জন্য এই আবিষ্কার অত্যন্ত মূল্যবান।’

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!