ঢাকা মঙ্গলবার, ২৯ জুলাই, ২০২৫

পটিয়ায় ফের সক্রিয় জামাই ফারুক, আতঙ্কে স্থানীয়রা

পটিয়া (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: জুলাই ২৯, ২০২৫, ০২:৪১ এএম

চট্টগ্রামের পটিয়া পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডের গাজীর বাড়িতে ঘরজামাই হিসেবে বসবাসকারী ওমর ফারুক ওরফে জামাই ফারুক ফের অপরাধ কর্মকা-ে সক্রিয় হয়ে উঠেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। গরু চুরি, মাছ চুরি, তার চুরি থেকে শুরু করে ইয়াবা বিক্রি ও সেবন, অপরাধের কোনো ক্ষেত্রই যেন বাদ নেই তার। এ নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও আতঙ্ক বিরাজ করছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, জামাই ফারুক মূলত আনোয়ারা উপজেলার বৈরাগ ইউনিয়নের স্থায়ী বাসিন্দা। নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়ায় বহু বছর আগেই নিজ গ্রাম থেকে বিতাড়িত হন এবং পরে পটিয়ার গাজীর বাড়িতে স্ত্রীর বাড়িতে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। এলাকাবাসীর অভিযোগ, তিনি বাইপাসসংলগ্ন কুখ্যাত নুরুল ইসলাম ডাকাতের ঘনিষ্ঠ এবং তার ‘সেকেন্ড ইন কমান্ড’ হিসেবে গরু চুরির চক্রে নেতৃত্ব দেন।

শেয়ানপাড়া ও বাহ্মণপাড়ায় রয়েছে জামাই ফারুকের একটি সংঘবদ্ধ চক্র। তারা ৫-৬ জন মিলে রাতে গরু চুরি, পুকুরের মাছ চুরি, বিদ্যুতের তার চুরি, এমনকি ইয়াবা ট্যাবলেট বিক্রি ও সেবনের মতো অপরাধে জড়িত। স্থানীয়দের মতে, ‘এ চক্রের দৌরাত্ম্যে রাতে কেউ নিরাপদ নয়। তাদের কারণে পটিয়ার শান্তিপ্রিয় এলাকাগুলো এখন আতঙ্কে কাঁপে।’

প্রায় দুই বছর আগে পটিয়ায় এস আলম গ্রুপের বাড়ির সামনে একটি দোকানে ডাকাতির ঘটনায় সিসিটিভি ফুটেজ দেখে পুলিশ জামাই ফারুককে শনাক্ত করে এবং গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে পাঠায়। কিন্তু জামিনে বের হয়ে এসে পুনরায় অপরাধ কর্মকা-ে জড়িয়ে পড়েন।

২০২৪ সালে এলাকাবাসী ও স্বজনদের উদ্যোগে লিখিত স্ট্যাম্প নিয়ে তাকে এলাকা ছাড়া করা হয়। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের সুযোগে তিনি পুনরায় এলাকায় ফিরে এসে পুরোনো কর্মসূচিই শুরু করেছেন বলে অভিযোগ।

স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান, ‘তার বিরুদ্ধে মুখ খুললেই হুমকি আসে। সে প্রকাশ্যে বলে, ‘আমি চুরি করি, কেহ কোনো দিন ধরতে পারে নাই, পারবেও না।’ এতটাই দুঃসাহসী হয়ে উঠেছে সে।’
এলাকাবাসী মনে করেন, জামাই ফারুক ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ না করা হলে ভবিষ্যতে আরও ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে। তাদের দাবি, এ চক্রকে ধরলে বিগত দিনের বহু গরু চুরির ঘটনার সূত্র বেরিয়ে আসবে।

এ বিষয়ে পটিয়া থানার ওসি নুরুজ্জামান বলেন, ‘বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। স্থানীয়দের অভিযোগ গুরুত্বসহকারে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কেউ অপরাধে জড়িত থাকলে তাকে আইনের আওতায় আনা হবে। অপরাধী যেই হোক, ছাড় দেওয়া হবে না।’