ঢাকা সোমবার, ২৫ আগস্ট, ২০২৫

হাঁটুপানি মাড়িয়ে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা

চারঘাট (রাজশাহী) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: আগস্ট ২৫, ২০২৫, ০২:১৫ এএম

রাজশাহীর চারঘাটের নন্দনগাছী বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয় ও কামিনী গঙ্গারামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রতিদিন ক্লাসে যেতে হয় হাঁটুপানি মাড়িয়ে। মাঠে বছরের ছয় মাসই থাকে জলাবদ্ধতা। সামান্য বৃষ্টিতেই অফিস ও ক্লাসরুম ডুবে যায়। বিদ্যালয় দুটি নিমপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ ভবনের পাশে। শিক্ষার্থী সংখ্যা প্রায় ৮০০। মাঠে স্থায়ী জলাবদ্ধতার কারণে খেলাধুলা তো হয়ই না, বরং শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষে আসা-যাওয়া করতেও ভোগান্তি পোহাতে হয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, জলাবদ্ধতা নিরসনে গত পাঁচ বছরে বিভিন্ন খাতে প্রায় ২০ লাখ টাকা ব্যয়ে ছয়টি প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়েছে। ২০১৯-২০ অর্থবছরে শুধু নন্দনগাছী উচ্চবিদ্যালয় মাঠ সংস্কারে বরাদ্দ ছিল ৬ লাখ ২০ হাজার টাকা। ২০২২-২৩ অর্থবছরে আবারও বাজার ও বিদ্যালয় মাঠ সংস্কারে ব্যয় হয় ৭ লাখ ২৮ হাজার টাকা। এ ছাড়া রাজস্ব খাত থেকেও কয়েকবার অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

কিন্তু এত বরাদ্দের পরও মাঠের চিত্র পালটায়নি। স্থানীয় বাসিন্দা আতাউর রহমান বলেন, ‘দুই বিদ্যালয়ের মাঠ যেন টাকা কামানোর মেশিন। প্রতিবছর প্রকল্প দেখিয়ে টাকা খরচ করা হয়, কিন্তু জলাবদ্ধতা থাকে আগের মতোই।’

কামিনী গঙ্গারামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একতলার অফিস ও শ্রেণিকক্ষে পানি ঢুকে নষ্ট হচ্ছে চেয়ার-টেবিল, বেঞ্চ ও কাগজপত্র। ফলে দ্বিতীয়তলার কয়েকটি কক্ষে গাদাগাদি করে চলছে ক্লাস। নন্দনগাছী উচ্চবিদ্যালয়ের মাঠেও হাঁটুপানি ডিঙিয়েই প্রবেশ করতে হয় শ্রেণিকক্ষে।

প্রধান শিক্ষক দিলরুবা খাতুন বলেন, ‘সামান্য বৃষ্টিতেই বিদ্যালয় ডুবে যাচ্ছে। কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করেছি, কিন্তু কোনো সমাধান হয়নি।’

ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান অভিযোগ করেন, ‘নন্দনগাছী উচ্চবিদ্যালয় সামান্য লাভের জন্য মাঠের পাশে পুকুর খনন করে ভাড়া দিয়েছে। এতে কালভার্ট বন্ধ হয়ে এলাকায় জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে।’

অভিযোগ অস্বীকার করে নন্দনগাছী উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আসাদুজ্জামান আখন্দ শিবলী বলেন, ‘বিদ্যালয়ের উন্নয়নের জন্য মাঠ ও পুকুর সংস্কার করা হয়েছিল। তবে কালভার্ট বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সমস্যা তৈরি হয়েছে। আমরা সমাধানের চেষ্টা করছি।’

উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘আমি নিজে হাঁটুপানি মাড়িয়ে বিদ্যালয় দুটি পরিদর্শন করেছি। শিক্ষার্থীরা প্রতিদিনই ভোগান্তি পোহাচ্ছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।’