সড়ক নয়, যেন মরণফাঁদ। চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ শাশিয়ালী গ্রামের বাসিন্দারা দীর্ঘদিন ধরে চলাচলের জন্য অনুপযোগী সড়কটিতে প্রতিনিয়ত বিপদে পড়ছেন। সড়কটির এমন অবস্থায় যে, হাঁটাচলা করতে হিমশিম হতে হয়; যানবাহন চলাচল তো দূরের কথা, একজন প্রতিবন্ধী বা গর্ভবতী রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া প্রায় অসম্ভব। বিকল্প পথে যেতে হলে অতিরিক্ত চার-পাঁচ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করতে হয়। ছোট ছোট শিশুরাও স্বাভাবিকভাবে বিদ্যালয়ে যেতে পারছে না।
বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) দুপুরে উপজেলার দক্ষিণ শাশিয়ালী থেকে পাটোয়ারী বাজার ও শাহী বাজার পর্যন্ত ২ কিলোমিটার সড়ক সংস্কারের দাবিতে ধানের চারা রোপন করে প্রতিবাদ করেন তারা। এর আগে শিক্ষার্থীসহ এলাকার শতাধিক মানুষের উপস্থিতিতে মানববন্ধন করে এলাকাবাসী।
এলাকাবাসির দাবি, দীর্ঘ ৩০–৪০ বছর ধরে অবহেলিত এই সড়কটি এখনো সংস্কার হয়নি। ইউনিয়নের প্রায় সব গ্রামীণ সড়ক পাকা হওয়া সত্ত্বেও অজানা কারণে শাশিয়ালী গ্রামের এই সড়কের উন্নয়নে কোনো উদ্যোগ নেয়নি কর্তৃপক্ষ। সামান্য বৃষ্টিতেই সড়কটি ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়ে। এতে রোগী বহন, যাতায়াতসহ আশেপাশের অন্তত ২০ হাজার মানুষ চরম ভোগান্তিতে পড়ছেন।
ইউনিয়ন জামায়াতে সেক্রেটারি আরিফুর রহমান বলেন, ‘এই সড়কটি সবচেয়ে বেশি অবহেলিত। বিগত সরকারের প্রতিনিধি কেউই এ সড়ক নির্মাণে কোনো ধরনের উদ্যোগ নেয়নি। উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদের ভূমিকা নিরব ছিল। উপজেলার অন্যান্য সড়কের জন্য তারা সরব হলেও এই সড়কের জন্য নয়।’
ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শহিন মোল্লা বলেন, ‘ফরিদগঞ্জ উপজেলার মধ্যে পাইকপাড়া উত্তর ইউনিয়ন সবচেয়ে বেশি অবহেলিত। তার মধ্যে শাশিয়ালী সড়কটির কথাই কি আর বলব, বাস্তবতা আপনারাই দেখেছেন। একটু আগে আপনাদের একজন সাংবাদিক তথ্য সংগ্রহ করতে এসে দেখে গেছে। উপজেলার অন্য কোনো সড়কে এমন পরিস্থিতি দেখা যায় না।’
সমাজসেবক মাহাবুবুর রহমান কালু বলেন, ‘খুবই দুঃখজনক। এই সড়ক দিয়ে চলাচল করে দিন পার করেছেন আমার দাদা ও বাবারা। বর্তমানে আমরা চলাচল করছি, তিন দশক শেষ, আরও কতশ বছর পার হবে, কিন্তু সরকার বা কোনো জনপ্রতিনিধি রাস্তাটি নির্মাণ করবে না। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যেতে পারে না কোনো ছেলে-মেয়ে। মাঝে মাঝে মাঝপথ থেকে ফিরতে হয়, জামাকাপড় প্যাক-কাদা নিয়ে। আমরা চলতে কষ্ট পাই, ছোটরা কিভাবে চলবে।’
এসময় উপস্থিত ছিলেন দক্ষিণ শাশিয়ালী এমএবারি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক উত্তম চন্দ্র, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রব, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মুসলিম দেওয়ান, আলাউদ্দিন, নেয়ামত, হানু বরকন্দাজ, আক্তার দেওয়ান, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং স্থানীয় এলাকাবাসী।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন