খাগড়াছড়িতে এক স্কুলছাত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় উত্তপ্ত পরিস্থিতির পর ধীরে ধীরে স্বাভাবিকতা ফিরে আসছে। যদিও সাধারণ মানুষের মধ্যে এখনো উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে। সহিংসতা ও অস্থিতিশীলতা এড়াতে খাগড়াছড়ি পৌরসভা, সদর উপজেলা এবং গুইমারা উপজেলায় ১৪৪ ধারা এখনো বহাল।
সড়ক অবরোধ, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ এবং সহিংস ঘটনার পর প্রশাসন সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। সেনাবাহিনীর পাশাপাশি বিজিবি ও পুলিশ সদস্যরা মাঠে রয়েছে এবং দলে দলে ঘর থেকে বের না হওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে।
রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় খাগড়াছড়ির পরিস্থিতি ‘স্বাভাবিক’ বলে রূপালী বাংলাদেশকে জানান জেলা পুলিশ সুপার মো. আরেফিন জুয়েল।
এর আগে, বেলা ১১টার দিকে জেলার গুইমারার রামছু বাজারে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এই ঘটনায় সেনাবাহিনীর সদস্যসহ কয়েকজন অবরোধকারী আহত হন বলে জানা গেছে। তবে আহতের সংখ্যা স্পষ্ট করেননি পুলিশ সুপার।
তারও আগে, সকালেই পরিস্থিতি উত্তরণে জেলা প্রশাসনের সম্মেলন কক্ষে বিশেষ আইনশৃঙ্খলা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা। তিনি পাহাড়ি-বাঙালি সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থেকে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখার আহ্বান জানান। একইসঙ্গে প্রশাসনকে কঠোরভাবে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে রাখার নির্দেশ দেন এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা যেন না ঘটে, সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে বলেন।
সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক এবিএম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার। আরও বক্তব্য দেন খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শেফালিকা ত্রিপুরা, সেনাবাহিনীর সদর জোন কমান্ডার লে. কর্নেল মো. খাদেমুল ইসলাম, পুলিশ সুপার আরেফিন জুয়েল, পাহাড়ি নেতা রশি শংকর তালুকদার এবং জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এমএন আবছারসহ রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা।
এদিকে, ধর্ষকদের গ্রেপ্তার, ভুক্তভোগী স্কুলছাত্রী ও তার পরিবারকে ক্ষতিপূরণ এবং হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে জুম্ম ছাত্র-জনতা ব্যানারে খাগড়াছড়িতে অনির্দিষ্টকালের জন্য ডাকা সড়ক অবরোধ দ্বিতীয় দিনের মতো চলছে। এতে জেলার অভ্যন্তরীণ ও দূরপাল্লার সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।
জেলা প্রশাসক এবিএম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার জানিয়েছেন, পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত ১৪৪ ধারা বহাল থাকবে।
উল্লেখ্য, গত ২৩ সেপ্টেম্বর খাগড়াছড়ি সদর উপজেলার সিঙ্গিনালা এলাকায় এক স্কুলছাত্রী সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়। পরদিন ভুক্তভোগীর বাবা অজ্ঞাতনামা তিনজনকে আসামি করে খাগড়াছড়ি সদর থানায় মামলা দায়ের করেন। এরপর সেনাবাহিনীর সহায়তায় অভিযুক্ত শয়ন শীলকে আটক করে পুলিশ।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন