প্রতিদিনই বাজারে শীতকালীন সবজির সরবরাহ বাড়ছে। তবে দাম এখনো ক্রেতার নাগালে আসেনি। রাজধানীর বাজারগুলোতে নতুন বেগুন, শিম, ফুলকপি, বাঁধাকপি ও শালগম বিক্রি হচ্ছে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় বেশি দামে।
শুক্রবার (২৮ নভেম্বর) রাজধানীর রামপুরা, মালিবাগ, শান্তিনগর ও সেগুনবাগিচা বাজার ঘুরে এবং ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
বিক্রেতারা জানান, গত অক্টোবর মাসের টানা বৃষ্টিতে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে শীতকালীন সবজির উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে। কোথাও কোথাও সবজির জমিও নষ্ট হয়েছে। ফলে পাইকারি ও খুচরা– উভয় পর্যায়েই সবজির দাম চড়া।
যদিও বর্তমানে খুচরা বাজারগুলোতে শীতের প্রায় সব ধরনের সবজি মিলছে। শিম, বেগুন, ফুলকপি, বাঁধাকপি ও শালগমের পাশাপাশি টমেটো, গাজর, মিষ্টিকুমড়া, পালং শাক, লাউ ও মুলাও রয়েছে। তবে এসব সবজির দাম নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করছেন ক্রেতারা।
মালিবাগ বাজারে সবজি কিনতে আসা শিহাব হোসেন বলেন, প্রায় এক মাস ধরে শীতের সবজি বাজারে এসেছে। কিন্তু দাম এখনো অনেক বেশি। আগের বছরগুলোতে এই সময়ে সবজির দাম অনেকটাই কমে আসত। এবার তেমন কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।
বাজারে ভালো মানের নতুন বেগুন বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ১০০ থেকে ১২০ টাকায়। সাধারণত গরমকালে– যখন উৎপাদন কম থাকে– এই দামে বেগুন বিক্রি হয়, শীতকালে যা নেমে আসে ৪০-৬০ টাকায়।
এদিকে মাঝারি আকারের ফুলকপি ও বাঁধাকপি প্রতিটি ৪৫-৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। নতুন শিমের দাম কেজিপ্রতি ১০০ টাকা বা তার বেশি। কোনো কোনো বাজারে সবুজ শিম ৭০-৮০ টাকা কেজিতেও বিক্রি হচ্ছে। অথচ অন্যান্য বছর এই সময়ে শিমের দাম থাকত ৫০ টাকা এবং ফুলকপি-বাঁধাকপি ২০-৩০ টাকার মধ্যে।
নতুন আলু সবসময়ই তুলনামূলক দামে বেশি থাকে। এবারও এর ব্যতিক্রম নয়। বাজার ও মানভেদে নতুন আলু বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ১২০ থেকে ১৫০ টাকায়।
অন্যান্য সবজির মধ্যে বরবটি বিক্রি হচ্ছে ৭০-৮০ টাকা কেজি দরে। ঢ্যাঁড়স ও পটোল বিক্রি হচ্ছে ৫০-৭০ টাকায়। নতুন মিষ্টি কুমড়া প্রতিটি ৮০-১০০ টাকার মধ্যে বিক্রি করতে দেখা গেছে। শাকের দামও চড়া। প্রতি আঁটি শাকের দাম কমপক্ষে ২০ টাকা, যেখানে শীত মৌসুমে সাধারণত ১০-১৫ টাকায় শাক পাওয়া যায়।
কারওয়ান বাজারের আড়তদার মালিক সমিতির সভাপতি মো. ইমরান মাস্টার বলেন, মাসখানেক আগে অস্বাভাবিক বৃষ্টির কারণে অনেক জায়গায় সবজির উৎপাদন ব্যাহত হয়। কৃষকরা নতুন করে চাষ শুরু করেছেন। ফলে এখনো সারা দেশ থেকে একযোগে ঢাকায় সরবরাহ আসেনি। আরও ৭-১০ দিন লাগতে পারে। তখন দাম অনেকটাই কমে যাবে।
সবজির দাম চড়া থাকলেও কিছুটা কমতে শুরু করেছে পেঁয়াজের দাম। কোথাও দেশি পেঁয়াজ কেজিপ্রতি ১২০ টাকা থাকলেও কোনো কোনো বাজারে ১১০-১১৫ টাকায়ও বিক্রি হচ্ছে।
অন্যদিকে, বাজারে ডিম ও মুরগির দাম তুলনামূলকভাবে সহনীয়। ফার্মের ডিম প্রতি ডজন ১২৫-১৩০ টাকায় এবং ব্রয়লার মুরগি প্রতি কেজি ১৬০-১৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।


