২০২১ সালের নভেম্বর থেকে প্রযুক্তিতে এক নতুন মাত্রা এসেছে—চ্যাটজিপিটি। মাইক্রোসফটের ওপেনএআই থেকে আগত এই এআই চ্যাটবট জীবনের কাজকে অনেক সহজ করেছে।
এটি প্রশ্নের উত্তর দেওয়া থেকে শুরু করে কবিতা লেখা, রেসিপি তৈরি, গণিত সমাধান এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাসাইনমেন্ট পর্যন্ত সাহায্য করে।
কিন্তু সম্প্রতি গবেষকরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটসের কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় ও এমআইটি–এর বিজ্ঞানীরা দেখেছেন, দীর্ঘদিন চ্যাটজিপিটির ওপর নির্ভরশীলতার কারণে মানুষের মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা কমতে পারে।
গবেষণায় ৫৪ জন প্রাপ্তবয়স্ককে তিন গ্রুপে ভাগ করা হয়েছিল—
-শুধুই নিজের মস্তিষ্ক ব্যবহার করে প্রবন্ধ লেখা (‘ব্রেন অনলি’)
-সার্চ ইঞ্জিন ব্যবহার করে লেখা
-চ্যাটজিপিটি ব্যবহার করে লেখা
লেখার সময় অংশগ্রহণকারীদের মস্তিষ্কে তড়িৎ সংকেত এবং প্রবন্ধের ভাষা ও মান পরিমাপ করা হয়।
চ্যাটজিপিটি ব্যবহারকারী গ্রুপের মস্তিষ্কের সক্রিয়তা অন্যদের তুলনায় কম ছিল।
তারা উদ্ধৃতিগুলো মনে রাখতে পারত না এবং লেখায় মানসিক সম্পৃক্ততা কম অনুভব করেছিল।
পরবর্তী ধাপে, যারা প্রথমে শুধু চ্যাটজিপিটি ব্যবহার করেছিলেন, তারা এখন নিজস্ব মস্তিষ্ক ব্যবহার করলেও কার্যক্ষমতা ঠিক আগের মতো ছিল না।
গবেষকরা জানান, দীর্ঘমেয়াদে এআই ব্যবহার করলে শেখার ক্ষমতা ও মানসিক তৎপরতা কমতে পারে। তবে তারা সতর্ক করেছেন—চতুর্থ ধাপে মাত্র ১৮ জন অংশগ্রহণকারী ছিল, তাই ফলাফলকে প্রাথমিক ধাপ হিসেবে দেখা উচিত। আরও গবেষণার প্রয়োজন আছে।
বিশ্লেষকরা মনে করেন, এআই স্বয়ংক্রিয়ভাবে আমাদের ‘বোকা’ বানাচ্ছে, এমনটি বলা যায় না। সম্ভবত গবেষণার পদ্ধতি এবং অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা ছোট হওয়ায় এই ফলাফল এসেছে।
এআই নির্ভরতা নতুন নয়; ১৯৭০-এর দশকে ক্যালকুলেটরের আগমনও মানুষের নির্ভরশীলতার মতো প্রভাব ফেলেছিল। তবে শিক্ষার্থীদের জন্য মানদণ্ড কঠোর রাখা হতো, যাতে তারা আগের মতো বা তার চেয়েও বেশি পরিশ্রম করে।