ঢাকা রবিবার, ১৩ জুলাই, ২০২৫

তৃণমূল নেতাকর্মী ঐক্যবদ্ধভাবে জিএম কাদেরের পাশে আছেন: শামীম হায়দার

রূপালী প্রতিবেদক
প্রকাশিত: জুলাই ৯, ২০২৫, ০৭:১১ পিএম
বনানীতে জাতীয় পার্টির সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিচ্ছেন মহাসচিব ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

জাতীয় পার্টির মহাসচিব ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেছেন, বিগত সময়ে কিছু সিনিয়র নেতা ও প্রেসিডিয়াম সদস্য জাতীয় পার্টির সঙ্গে বেইমানি করায় দল সাতবার ভেঙেছে। তবে তৃণমূল নেতাকর্মীরা কখনো দল ছেড়ে যাননি, বরং সবসময় দল এবং চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদেরের (জিএম কাদের) পাশে থেকেছেন।

বুধবার (৯ জুলাই) দুপুরে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের বনানী কার্যালয়ের মিলনায়তনে ঢাকা মহানগর উত্তরের নবনিযুক্ত কমিটির আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ২৫ জুন ঢাকায় অনুষ্ঠিত সভায় তৃণমূল নেতাকর্মীরা জিএম কাদেরের প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থন জানিয়ে প্রমাণ করেছে, জাতীয় পার্টির ভবিষ্যতের সিদ্ধান্ত সেদিনই স্পষ্ট হয়ে গেছে। চেয়ারম্যানের বক্তব্য ও ভবিষ্যদ্বাণীগুলো গণমাধ্যম গুরুত্ব দিয়ে পর্যালোচনা করেছে। তিনি ২০২১ সালে যা বলেছেন, তার অনেকটাই ২০২৪ সালে বাস্তব হয়েছে। এখন যেগুলো বলছেন, সেগুলোও আগামী দিনে সত্য প্রমাণিত হবে।

জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের সততা ও স্বচ্ছতা নিয়ে ব্যারিস্টার পাটোয়ারী বলেন, তিনি পাঁচ বছর দুটি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থেকেও কোনো দুর্নীতির অভিযোগের মুখে পড়েননি। আওয়ামী লীগ সরকারও তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা দিতে পারেনি। সাবেক রাষ্ট্রপতি পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ যখন ক্ষমতায় ছিলেন, তখন জিএম কাদের কোনো সুবিধাভোগী ছিলেন না, বরং নিজ যোগ্যতায় উচ্চ পদে চাকরি করেছেন।

তিনি আরও বলেন, ২০১৪ সালে এরশাদ যখন নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত নেন, তখন গোলাম মোহাম্মদ কাদেরও অধিকাংশ প্রার্থীকে নিয়ে সেই সিদ্ধান্তে অটল ছিলেন। সরকার চাইলেই তাকে মন্ত্রী বানাতে পারত, কিন্তু তিনি তা নেননি। সংসদের বাইরে থেকেও তিনি দেশের পক্ষে বলেছিলেন।

জাতীয় পার্টির মহাসচিব বলেন, ২০১৯ সালে অনেকে বলেছিলেন এরশাদ সাহেবের মৃত্যুর পর জাতীয় পার্টি টিকবে না। কিন্তু জিএম কাদেরের নেতৃত্বে দল আরও সংগঠিত হয়েছে। আজ যদি কেউ বলেন, তাকে সরিয়ে দেওয়া হবে তা হাস্যকর। কারণ, জাতীয় পার্টির মূল শক্তি তৃণমূল নেতাকর্মীরা এবং তারা জিএম কাদেরের পাশেই আছেন।

তিনি আরও বলেন, গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়েছে, কাউন্সিলে হেরে যাওয়ার ভয়ে জিএম কাদের নাকি কাউন্সিল করছেন না। কিন্তু কাউন্সিলে যারা থাকবেন তারা তো তৃণমূল নেতাকর্মী। তাদের সঙ্গেই জিএম কাদেরের শক্তি। তাই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার মতো কেউ নেই।

নেতাকর্মীদের উদ্দেশে ব্যারিস্টার পাটোয়ারী ঘোষণা দেন, শিগগিরই আমরা বিভাগ, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে যাব। প্রতিটি ইউনিটে বর্ধিত সভা হবে। পল্লীবন্ধুর উন্নয়ন ও সুশাসনের আদর্শ নিয়ে জনগণের কাছে যাব। জাতীয় পার্টির সময়ে কোনো গণহত্যা হয়নি, তাই মানুষ আজও জাতীয় পার্টিকে নিরাপদ মনে করে।

সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য মীর আব্দুস সবুর আসুদ, অ্যাড. মো. রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, আলমগীর সিকদার লোটন, শেরিফা কাদের, মনিরুল ইসলাম মিলন, বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাড. মো. মমতাজ উদ্দিন, ইঞ্জিনিয়ার মইনুর রাব্বী চৌধুরী রুম্মন, নুরুল আজহার শামীম, মো. খলিলুর রহমান খলিল, ভাইস চেয়ারম্যান হেলাল উদ্দিন, হুমায়ুন খান, প্রেস সেক্রেটারি খন্দকার দেলোয়ার জালালী, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল হান্নান, দফতর সম্পাদক মাহমুদ আলম, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য মোড়ল জিয়াউর রহমান, সমরেশ মন্ডল মানিক প্রমুখ।

সভায় সভাপতিত্ব করেন জাতীয় পার্টি ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক মো. সামছুল হক এবং সঞ্চালনা করেন সদস্য সচিব সুলতান আহমেদ সেলিম।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন মহানগর উত্তরের নেতা কাজী আবুল খায়ের, আনিসুর রহমান খোকন, মাহমুদুল হাসান আলাল, ইব্রাহিম খান, নজরুল ইসলাম সর্দার, আক্তারুজ্জামান মাসুম, আবুল হোসেন, নাইমুল ইসলাম নয়ন, ফজলুল হক শিশির, হারুন পাটোয়ারী, আব্দুল বারেক, মো. এরশাদ, শফিকুল ইসলাম লিপন, নুরুল হক নুরু, সালেহ আহমেদ এবং মবিন হোসেন কিশোর।