ঢাকা মঙ্গলবার, ১২ আগস্ট, ২০২৫

পাকিস্তান সেনাপ্রধানের মন্তব্যের জবাব

‘ভারত পারমাণবিক ব্ল্যাকমেইলে নতি স্বীকার করবে না’

বিশ্ব ডেস্ক
প্রকাশিত: আগস্ট ১২, ২০২৫, ০৯:২৯ এএম
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল ও পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনির। ছবি- সংগৃহীত

সম্প্রতি মার্কিন সফরে গিয়ে পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনিরের দেওয়া মন্তব্য নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ভারত। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, এই বক্তব্য পাকিস্তানের ‘পারমাণবিক অস্ত্রের ভয় দেখানোর’ পুরোনো কৌশলেরই অংশ। ভারত কখনো পারমাণবিক ব্ল্যাকমেইলের কাছে নতি স্বীকার করবে না বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়। সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস সোমবার এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিবৃতিতে আরও বলেছে, এমন মন্তব্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সামনে পাকিস্তানের পারমাণবিক কমান্ড ও কন্ট্রোল ব্যবস্থার বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে, বিশেষ করে যখন একটি দেশের সেনাবাহিনী সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সঙ্গে একযোগে কাজ করে। এটি অত্যন্ত দুঃখজনক যে, এ ধরনের মন্তব্য একটি বন্ধুত্বপূর্ণ তৃতীয় দেশের মাটি থেকে করা হয়েছে।

ভারতের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ‘ভারত কখনো পারমাণবিক ব্ল্যাকমেইলের কাছে নতি স্বীকার করবে না এবং জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষায় প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত।’

এর আগে যুক্তরাষ্ট্র সফরে গিয়ে পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনির প্রকাশ্যে ঘোষণা দিয়েছেন, সিন্ধু নদে ভারত যদি বাঁধ নির্মাণ করে, তবে সেটি সম্পূর্ণ হওয়ার পর পাকিস্তান ১০টি মিসাইল ছুড়ে সেই বাঁধ ধ্বংস করে দেবে। একইসঙ্গে তিনি পারমাণবিক যুদ্ধের হুমকিও দেন, যা পুরো দক্ষিণ-এশীয় অঞ্চলকে নতুন করে উদ্বেগের মধ্যে ফেলেছে।

গত সপ্তাহে ফ্লোরিডার ট্যাম্পায় তার জন্য আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে মুনির বলেন, ‘আমরা পারমাণবিক শক্তিধর দেশ। যদি দেখি যে আমরা ডুবে যাচ্ছি, তাহলে অর্ধেক দুনিয়াকে সঙ্গে নিয়ে ডুবব।’

তিনি আরও জানান, পাকিস্তান ভারতের প্রতিটি পদক্ষেপ পর্যবেক্ষণ করছে এবং সিন্ধু নদকে ‘ভারতের পারিবারিক সম্পত্তি’ হিসেবে দেখার কোনো সুযোগ নেই। তার স্পষ্ট ভাষায়, ‘আমাদের মিসাইলের কোনো অভাব নেই।’

এ বছরের মে মাসেই ভারত-পাকিস্তান চার দিনব্যাপী সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে। তার আগের মাসে কাশ্মীরের পেহেলগামে সশস্ত্র হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার ঘটনায় নয়াদিল্লি সিন্ধু নদ চুক্তি বাতিল করে এবং পাকিস্তানের জন্য পানি সরবরাহ বন্ধের ঘোষণা দেয়।

১৯৬০ সালে বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় স্বাক্ষরিত এ চুক্তির মাধ্যমে সিন্ধুর অববাহিকার তিনটি নদীর পানি পেয়ে আসছে পাকিস্তান।

নদী ও পানির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দুই দেশের সম্পর্ক অতীতেও বহুবার তিক্ত হয়েছে, কিন্তু সরাসরি বাঁধ উড়িয়ে দেওয়ার ঘোষণা আগে কখনো আসেনি। পরিস্থিতি সামাল দিতে কূটনৈতিক উদ্যোগ না বাড়ালে এ ধরনের উত্তেজনা বড় ধরনের সংঘাতে রূপ নিতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।