ঢাকা রবিবার, ১২ অক্টোবর, ২০২৫

মিসরে ট্রাম্প-সিসির সভাপতিত্বে গাজা সামিট সোমবার, যোগ দেবেন বিশ্বনেতারা

বিশ্ব ডেস্ক
প্রকাশিত: অক্টোবর ১২, ২০২৫, ১০:২৬ এএম
সোমবার গাজা সামিটে সভাপতিত্ব করবেন ট্রাম্প সিসি। ছবি- সংগৃহীত

গাজা যুদ্ধ বন্ধ করতে ডোনাল্ড ট্রাম্পের ২০ দফা শান্তি প্রস্তাব নিয়ে বিস্তারিত আলোচনার জন্য একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে মিসরে। আগামীকাল সোমবার দেশটির  শার্ম আল-শেখ অবকাশ যাপন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত এই সম্মেলনে যৌথভাবে সভাপতিত্ব করবেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং মিসরের সেনাশাসক আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি। সম্মেলনে ২০টিরও বেশি দেশের নেতা অংশ নেবেন বলে জানিয়েছে কায়রো। 

এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এই সম্মেলনের লক্ষ্য হলো গাজা যুদ্ধের অবসান, মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা জোরদার এবং আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার নতুন যুগের সূচনা।

জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরেস, যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমার, ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি, স্পেনের পেদ্রো সানচেজ এবং ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাখোঁ তাদের উপস্থিতি নিশ্চিত করেছেন। তবে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বা ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের কোনো প্রতিনিধি উপস্থিত থাকবেন কি না, তা এখনো পরিষ্কার নয়।

এমন এক সময় এই ঘোষণা এসেছে যখন গাজায় ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র-নেতৃত্বাধীন যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর হাজার হাজার বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনি উপকূল ধরে উত্তর গাজায় ফিরে যাচ্ছেন। তারা পায়ে হেঁটে, গাড়িতে করে বা গাড়ি টেনে দীর্ঘ পথ অতিক্রম করে ঘরে ফিরছেন।

যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপে ইসরায়েলি সেনারা আংশিকভাবে গাজা থেকে সরে গেছে। যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় হওয়া এই চুক্তি অনুযায়ী, যুদ্ধের অবসান ঘটবে। দুই বছরের বেশি সময় ধরে চলা এই সংঘাতে এরই মধ্যে ৬৭ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে এবং গাজা যেন এক ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।

গাজার তথ্য মন্ত্রণালয় বলছে, যুদ্ধবিরতির পর পাঁচ হাজারের বেশি জনসেবামূলক কার্যক্রম চালানো হয়েছে, যার মধ্যে গাজা সিভিল ডিফেন্স, পুলিশ ও পৌরসভা দলগুলো ৮৫০টিরও বেশি উদ্ধার ও ত্রাণ অভিযান সম্পন্ন করেছে। বিভিন্ন স্থান থেকে ধ্বংসস্তূপ সরানো, মরদেহ উদ্ধার এবং ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় সুরক্ষা নিশ্চিতে কাজ করছেন তারা।

এদিকে শুক্রবার (১০ অক্টোবর) সকাল থেকে বিভিন্ন এলাকা হতে প্রায় ১৫০টি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে, শুধু খান ইউনিস শহরেই ২৮টি মরদেহ পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে আল নাসের হাসপাতাল । এ ছাড়া বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ এবং পয়ঃনিষ্কাশন লাইন পুনঃস্থাপনে ৯০০টিরও বেশি সেবা মিশন পরিচালিত হয়েছে।

তবে এই কাজগুলো চলছে ন্যূনতম সম্পদের মধ্যেই। কারণ ইসরায়েলের অবরোধ এখনো বহাল রয়েছে যার কারণে জ্বালানি ও সরঞ্জাম প্রবেশ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। অবরোধ চলাকালে ইসরায়েলি হামলায় অ্যাম্বুলেন্স, অগ্নিনির্বাপক গাড়ি ও সিভিল ডিফেন্স কেন্দ্রগুলো ধ্বংস হয়ে গেছে, ফলে উদ্ধার তৎপরতা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

খান ইউনিসের মেয়র জানিয়েছেন, ইসরায়েলি হামলায় দক্ষিণ গাজার ৮৫ শতাংশ অঞ্চল ধ্বংস হয়েছে এবং শহরের রাস্তা থেকে প্রায় ৪ লাখ টন ধ্বংসাবশেষ অপসারণ করতে হবে।