জাপানের সঙ্গে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় বাণিজ্য চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে বলে দাবি করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মঙ্গলবার রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে বহুল প্রতীক্ষিত এই বাণিজ্য চুক্তির ব্যাপারে জানান তিনি। সংবাদমাধ্যম সিএনএন-এর এক প্রতিবেদনে এ খবর জানানো হয়েছে।
ট্রাম্প ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া এক পোস্টে লিখেছেন, ‘আমরা জাপানের সঙ্গে একটি বিশাল চুক্তি সম্পন্ন করেছি, সম্ভবত এটি ইতিহাসের সবচেয়ে বড় চুক্তি।’
চুক্তির অংশ হিসেবে, জাপান থেকে যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি করা পণ্যের ওপর ১৫ ভাগ ‘পারস্পরিক’ ট্যারিফ বসানো হবে বলে জানিয়েছেন ট্রাম্প। একইসঙ্গে জাপান যুক্তরাষ্ট্রে ৫৫০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
ট্রাম্প আরও লেখেন, ‘এই চুক্তির মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র ৯০ ভাগ মুনাফা অর্জন করবে।’ তবে তিনি এই বিনিয়োগ কীভাবে বাস্তবায়ন করা হবে—সে বিষয়ে কোনো নির্দিষ্ট তথ্য দেননি। এ বিষয়ে এখনো পর্যন্ত কোনো আনুষ্ঠানিক টার্ম শিটও প্রকাশ করা হয়নি।
ট্রাম্প বলছেন, ‘এই চুক্তি লাখ লাখ কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে। এ রকম আগে কখনো দেখা যায়নি। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, জাপান এখন তাদের দেশকে বাণিজ্যের জন্য উন্মুক্ত করে দিচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে গাড়ি, ট্রাক, চাল এবং কিছু কৃষিপণ্যসহ অন্যান্য সামগ্রী। জাপান পারস্পরিক হারে ১৫ ভাগ ট্যারিফ দেবে যুক্তরাষ্ট্রকে।’
ট্রাম্পের ঘোষণার পরপরই জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবা জানান, চুক্তির বিস্তারিত পরীক্ষা করে দেখা হবে এবং প্রয়োজনে ট্রাম্পের সঙ্গে ফোনে অথবা সরাসরি বৈঠক করা হবে।
তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত আলোচনা করেছি, বিশেষ করে গাড়ি এবং অন্যান্য পণ্য ও জাতীয় স্বার্থের বিষয়ে। আমরা বিশ্বাস করি, এই চুক্তি কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে, উন্নতমানের পণ্য উৎপাদনে সহায়তা করবে এবং বিশ্বে উভয় দেশের ভূমিকা আরও সুদৃঢ় করবে।’
ট্রুথ সোশ্যালে পোস্ট করার কিছুক্ষণের মধ্যেই হোয়াইট হাউসের ইস্ট রুমে রিপাবলিকান কংগ্রেস সদস্যদের সঙ্গে এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিতে গিয়ে ট্রাম্প বলেন, ‘আমি ইতিহাসের সবচেয়ে বড় বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষর করেছি; সম্ভবত জাপানের সঙ্গে এটি ইতিহাসের সবচেয়ে বড় চুক্তি।’
তিনি আরও বলেন, ‘তাদের গুরুত্বপূর্ণ লোকজন এখানে এসেছিল এবং আমরা দীর্ঘ সময় ধরে এই চুক্তিটি চূড়ান্ত করেছি। এটি সবার জন্যই একটি দারুণ বিষয়।’
এই ঘোষণা এমন এক সময় এলো, যখন ইউরোপীয় ইউনিয়ন, দক্ষিণ কোরিয়া, ভারতসহ অন্যান্য বড় বাণিজ্য অংশীদারদের সঙ্গে আলোচনা স্থবির হয়ে পড়েছে। ট্রাম্পের ঘোষিত আগামী ১ আগস্টের ট্যারিফ সময়সীমা ঘনিয়ে আসার প্রেক্ষাপটেই এ চুক্তি আলোচিত হচ্ছে।