আকাশপথে এক ভয়ানক অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়েছে ডেল্টা এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট। বুধবার (২৯ জুলাই) যুক্তরাষ্ট্রের সল্ট লেক সিটি থেকে অ্যামস্টারডামগামী ফ্লাইটটি আচমকা ভয়াবহ টার্বুলেন্সের কবলে পড়ে।
তীব্র ঝাঁকুনিতে বিমানের খাবারের ট্রলি, মোবাইল ফোন এবং সিটবেল্ট না পরা যাত্রীরা ছিটকে গিয়ে ছাদের সঙ্গে ধাক্কা খান। পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ ছিল যে, মিনেসোটা অঙ্গরাজ্যের মিনিয়াপোলিস-সেন্ট পল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ফ্লাইটটি জরুরি অবতরণ করে , হাসপাতালে পাঠানো হয় অন্তত ২৫ জনকে ।
বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানায়, স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৭টা ২৫ মিনিটে বিমানটি অবতরণ করে। বিমানবন্দরের দমকল ও প্যারামেডিক টিম গেটে পৌঁছে আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেন, পরে কয়েকজনকে হাসপাতালে পাঠানো হয়।
ফ্লাইটটি সম্ভবত দক্ষিণ-পশ্চিম ওয়াইওমিংয়ের আকাশে প্রবেশ করার সময় এই তীব্র টার্বুলেন্সের শিকার হয়। আগেই মার্কিন আবহাওয়া কর্তৃপক্ষ ওই অঞ্চলকে সম্ভাব্য ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেছিল।
ডেল্টা এয়ারলাইন্সের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, বিমানটিতে মোট ২৭৫ জন যাত্রী ও ১৩ জন ক্রু ছিলেন । আহত যাত্রীদের মূল্যায়নের জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে এবং বৃহস্পতিবার দুপুরের মধ্যে যারা তাদের অবস্থা জানাতে রাজি ছিলেন, তারা সবাই হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন। সাতজন ক্রু সদস্যও চিকিৎসা শেষে ছাড়া পান।
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় আবহাওয়া পরিষেবার সল্ট লেক সিটি শাখা বুধবার ওয়াইওমিংয়ের ওপর বজ্রঝড়ের সম্ভাবনার বিষয়ে আগাম সতর্কতা জারি করেছিল। সিএনএনের বিশ্লেষণ অনুযায়ী, ওই সন্ধ্যায় ঝড়ের মেঘের উচ্চতা পৌঁছেছিল ৩৫ হাজার থেকে ৪০ হাজার ফুট পর্যন্ত। আর বিমানের উড়ান উচ্চতা ছিল ঠিক সেই সময় ৩৫ হাজার ফুটের কাছাকাছি।
ফ্লাইট ট্র্যাকিং সাইট Flightradar24-এর তথ্য অনুযায়ী, টার্বুলেন্স শুরু হওয়ার প্রায় ৪০ মিনিট পর বিমানটি হঠাৎ ৩০ সেকেন্ডে এক হাজার ফুট উপরে উঠে যায়, পরে আবার নেমে আসে প্রায় ১,৩৫০ ফুট। এরপরই বিমানটি মিনিয়াপোলিস-সেন্ট পলের দিকে রুট পরিবর্তন করে।
প্রসঙ্গত, গত বছর ইউনাইটেড এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটেও একই রকম টার্বুলেন্সে সাতজন আহত হয়েছিলেন। তাছাড়া চলতি বছর মার্চ মাসেও একাধিক ফ্লাইট টার্বুলেন্সের কারণে ওয়াকো, টেক্সাসে জরুরি অবতরণ করেছিল।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, টার্বুলেন্স নিয়মিতই ঘটে, তবে কখনও কখনও এটি ভয়াবহ রূপ নিতে পারে, বিশেষ করে যখন যাত্রীরা সিটবেল্ট বাঁধেন না। তাই আকাশে ভ্রমণের সময় সবসময় সতর্ক থাকা এবং সিটবেল্ট বাঁধা রাখা খুবই জরুরি।