ঢাকা মঙ্গলবার, ২৬ আগস্ট, ২০২৫

পলাশে কালের সাক্ষী শতবর্ষী জমিদারবাড়ি,  এখন ‘জামিনা মহল’

পলাশ (নরসিংদী) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: আগস্ট ২৬, ২০২৫, ০৯:৫৬ এএম
শতবর্ষী জমিদার বাড়ি। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

নরসিংদীর পলাশ উপজেলার ডাঙ্গা ইউনিয়নের জয়নগর এলাকায় শতবর্ষী একটি জমিদারবাড়ি আজও কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। নিপুণ কারুকাজে নির্মিত এই বাড়িটি মোগল আমলের জমিদার লক্ষ্মণ সাহা নির্মাণ করেন বলে জানা যায়। সম্পূর্ণ শৈল্পিক ছোঁয়ায় নির্মিত এ ভবনে রয়েছে ২৪টি কক্ষ।

জমিদারবাড়িটির পাশেই রয়েছে একটি কারুকার্য খচিত ছোট মন্দির এবং একটি অর্ধনির্মিত পুরোনো ভবন। বাড়ির পেছনে আছে সবুজে ঘেরা বাগান, আর পুরো এলাকা ঘিরে রয়েছে উঁচু প্রাচীর। বাড়ির পাশে রয়েছে সেই সময়কার একটি পুকুর ও শানবাঁধানো ঘাট। পুকুরঘাটের পাশে পূজা-অর্চনার জন্য নির্মিত হয়েছে একটি বড় আকারের মঠ।

এই বিশাল জমিদারবাড়িটি বর্তমানে ‘উকিলের বাড়ি’ নামে পরিচিত। বর্তমান মালিক আহম্মদ আলী একজন আইনজীবী। স্বাধীনতার পর জমিদার লক্ষ্মণ সাহার নাতি নারায়ণ সাহা জমিদারির সব সম্পত্তি আহম্মদ আলীর কাছে বিক্রি করে নারায়ণগঞ্জে চলে যান। পরে আহম্মদ আলী তার স্ত্রীর নামানুসারে বাড়িটির নাম দেন ‘জামিনা মহল’।

তবে স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের অভিযোগ, এই জমিদারবাড়ি ও তার সম্পত্তি মূলত দেবোত্তর সম্পত্তি ছিল।

প্রবীণ স্থানীয় বাসিন্দা সিদ্দিকুর রহমান জানান, ব্রিটিশ ভারতের সময় এই এলাকা দেবোত্তর হিসেবে চিহ্নিত ছিল, অর্থাৎ এটি ওয়াক্‌ফভুক্ত সম্পত্তি ছিল এবং এর জন্য জমিদারদের খাজনা দিতে হতো না।

জমিদার লক্ষ্মণ সাহার তিন ছেলে- নিকুঞ্জ সাহা, পেরিমোহন সাহা ও বঙ্কু সাহা- জমিদারের মৃত্যুর পর এই সম্পত্তি দেখাশোনা করতেন। দেশ ভাগের সময় বঙ্কু সাহা ভারতে চলে যান। স্বাধীনতার আগে নিকুঞ্জ সাহাও দেশত্যাগ করেন। এরপর জমিদারের কনিষ্ঠ পুত্র পেরিমোহন সাহা সম্পত্তির দেখভাল শুরু করেন।

পেরিমোহন সাহার ছেলে নারায়ণ সাহা পরবর্তীতে সম্পত্তিটি বিক্রি করে দেন, যদিও এটি দেবোত্তর ছিল বলে দাবি করছে স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়। ‘হিন্দু ট্রাস্ট’ নামের একটি সংগঠন সম্পত্তি বিক্রির বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করে, যা এখনো বিচারাধীন।