ঢাকা শুক্রবার, ১৫ আগস্ট, ২০২৫

পকেটে মোবাইল রাখলে হারাতে পারেন বাবা হওয়ার ক্ষমতা

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: আগস্ট ১৫, ২০২৫, ০৫:৫৮ পিএম
পকেটে ফোন। ছবি- সংগৃহীত

বর্তমান সময়ে কোলে ল্যাপটপ রেখে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাজ করা হয়। একইভাবে দীর্ঘ সময় স্মার্টফোন প্যান্টের পকেটেও রাখা হয়। তবে এই আধুনিক জীবনের সুবিধাময় বস্তু কখনো কখনো ভয়াবহ বিপদে ফেলে।

সাম্প্রতিক এক গবেষণায় বলা হয়েছে, এই ধরনের অভ্যাস পুরুষদের প্রজনন ক্ষমতার ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে।

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় ও ইনস্টিটিউট অফ রিপ্রোডাকটিভ মেডিসিন-এর এক যৌথ গবেষণায় দেখা গেছে, ল্যাপটপ ও মোবাইল ফোনের অতিরিক্ত ব্যবহারে শুক্রাশয়ের তাপমাত্রা ও কোষে চাপ পড়ে, যা স্পার্মের গুণমান ও উৎপাদন কমিয়ে দেয়। এতে বাড়ছে বন্ধ্যাত্বের ঝুঁকি।

গবেষণায় কী উঠে এসেছে?

২০ থেকে ৪০ বছর বয়সী প্রায় ১২০০ পুরুষের ওপর গবেষণা চালানো হয়।

যেখানে দেখা যায়, যারা প্রতিদিন পাঁচ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে কোলের ওপর ল্যাপটপ রাখেন কিংবা প্যান্টের পকেটে স্মার্টফো বহন করেন, তাদের মধ্যে শুক্রাণুর সংখ্যা ও গুণগত মান অনেকটাই কম। চমকপ্রদভাবে, এই ১২০০ জনের মধ্যে ৭০৮ জনই অ্যাজোস্পার্মিয়ার (যেখানে স্পার্ম উৎপাদন প্রায় বন্ধ) শিকার।

কীভাবে ক্ষতি করছে ল্যাপটপ ও মোবাইল

পুরুষের শুক্রাশয় শরীরের বাইরে থাকে কারণ, স্বাভাবিক স্পার্ম উৎপাদনের জন্য এর তাপমাত্রা শরীরের তাপমাত্রার চেয়ে ২-৪ ডিগ্রি কম থাকা প্রয়োজন। কিন্তু ল্যাপটপ ও মোবাইল ফোনের কারণে তিনটি প্রধান সমস্যা দেখা দিতে পারে।

১. চাপ: কোলের ওপর ল্যাপটপ রাখলে শুক্রাশয়ে সরাসরি চাপ পড়ে, যা কোষগুলোর ক্ষতি করে।

২. তাপ: ল্যাপটপ বা ফোন থেকে নির্গত তাপ শুক্রাশয়ের তাপমাত্রা বাড়িয়ে দেয়, ফলে শুক্রাণু উৎপাদন ব্যাহত হয়।

৩. বিকিরণ: এসব ডিভাইস থেকে বের হওয়া তড়িৎচুম্বকীয় বিকিরণ দীর্ঘদিন শরীরে লাগলে শুক্রাণু উৎপাদন সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাও থাকে।

মোবাইল ফোনের ক্ষতি কেমন?

মোবাইল থেকে যে ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক ওয়েভ নির্গত হয়, তা তুলনামূলকভাবে দুর্বল হলেও শুক্রাশয়ের সংবেদনশীল কোষে এর প্রভাব পড়ে। ফোন দীর্ঘসময় পকেটে রাখলে শুক্রাণুর গতি ও গুণমান কমে যেতে পারে। শুক্রাণুর লেজ ও মাইটোকন্ড্রিয়া গরম ও বিকিরণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়, ফলে এগিয়ে যাওয়ার ক্ষমতাও কমে যায়।

কী করবেন?

* ল্যাপটপ কোলের পরিবর্তে ডেস্কে রাখুন
* ফোন শরীর থেকে দূরে রাখুন, বিশেষ করে ঘুমের সময়
* ঢিলেঢালা ও আরামদায়ক পোশাক পরুন

স্বাস্থ্য সচেতনতা ও গ্যাজেট ব্যবহারে সতর্কতা আপনার ভবিষ্যতের পরিবার পরিকল্পনার পথে বড় বিপদ এড়াতে সাহায্য করতে পারে।