টেস্ট ক্রিকেটে ইতিহাস গড়ার এক অসাধারণ সুযোগ ছিল উইয়ান মুল্ডারের সামনে। মাত্র ৩৩ রানে পিছিয়ে ছিলেন কিংবদন্তি ব্রায়ান লারার ৪০০ রানের সেই অতিমানবীয় ইনিংস থেকে।
কিন্তু দলীয় প্রয়োজনে নিজেকে থামিয়ে দিলেন উইয়ান মুল্ডার—ঘোষণা করে দিলেন ইনিংস, নাম লেখালেন ক্রিকেট ইতিহাসের শ্রদ্ধার পাতায়।
বুলাওয়েতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টের দ্বিতীয় দিনের লাঞ্চে দক্ষিণ আফ্রিকা ছিল ৬২৬/৫। মুল্ডার ছিলেন অপরাজিত ৩৬৭ রানে।
রেকর্ড গড়ার ইনিংসটি মুল্ডার সাজালেন ৪৯ চার ও চার ছক্কায়, ৩৩৪ বলে ১১০ স্ট্রাইকরেট করেন ৩৬৭ রান।
অথচ ম্যাচের এখনও চারদিন বাকি ছিল, রেকর্ড ছোঁয়ার জন্য সময় যথেষ্টই ছিল তার হাতে। তবু দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথমবারের মতো নেতৃত্ব পাওয়া এই ২৭ বছর বয়সী অলরাউন্ডার বেছে নিলেন দলকেই।
নিজেকে থামিয়ে গড়লেন গর্বের রেকর্ড
এই ইনিংস এখন দক্ষিণ আফ্রিকার ইতিহাসে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত স্কোর। মুল্ডার ছাড়িয়ে গেছেন হাশিম আমলার ৩১১ রানের সেই স্মরণীয় ইনিংসকেও। একই সঙ্গে টেস্ট ইতিহাসে পঞ্চম সর্বোচ্চ স্কোর এখন মুল্ডারের।
লারার ২০০৪ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে অ্যান্টিগায় করা ৪০০ রানের ইনিংসের পর টেস্ট ক্রিকেটে চারশ ছুঁতে পারে না আর কেউই।
মুল্ডার হয়ে উঠতে পারতেন দ্বিতীয়জন, কিন্তু তিনি যেন সম্মান জানালেন কিংবদন্তিকে—যেমনটা ১৯৯৮ সালে অস্ট্রেলিয়ার মার্ক টেইলর করেছিলেন ডন ব্র্যাডম্যানের ৩৩৪ রানের ইনিংস ছুঁয়ে থেমে গিয়ে।
কেবল লারাই নন, মালডার ছাড়িয়ে যেতেন আরও অনেককে
মালডারের আগে টেস্ট ক্রিকেটে ৩৬৭ রানের চেয়ে বেশি রান রয়েছে কেবল চারজন ব্যাটারের—লারা (৪০০ ও ৩৭৫), হেইডেন (৩৮০), জয়াবর্ধনে (৩৭৪)। ৩৬৭ রানের এই ইনিংসটি মালডারের ক্যারিয়ারের মাত্র তৃতীয় শতক। আগের টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসেও করেছিলেন ১৪৭ রান।
অবশ্য এই ইনিংসে তাকে ভাগ্যও সহায়তা করেছে। আগের দিন জিম্বাবুয়ের তানাকা চিভাঙ্গার এক ডেলিভারিতে বোল্ড হয়ে ফিরে যাচ্ছিলেন ২৪৭ রানে, কিন্তু রিপ্লেতে ধরা পড়ে সেটা ছিল ‘নো বল’। সেই সুযোগেই গড়েন ৩৬৭ রানের ঐতিহাসিক ইনিংস।