অনাদি অনন্ত মহাশূন্যের রহস্যভেদ করতে চায় মানুষ। অথচ নিকটতম প্রতিবেশী চাঁদকেই এখনও পুরোপুরি চিনে ওঠা গেল না। যেমন- চাঁদের দুই পিঠ। একে অপরের সঙ্গে তাদের পার্থক্যই ‘চাঁদের উল্টো পিঠে’র মতো প্রবাদের সৃষ্টি করেছে।
কিন্তু কেন চাঁদের দুই পিঠ পরস্পরের চেয়ে এত আলাদা তা বহু বছর ধরেই ভাবিয়েছে বিজ্ঞানীদের। এবার নাসার বিজ্ঞানীরা খুঁজে পেলেন এর কারণ।
সম্প্রতি ‘নেচার’ পত্রিকায় প্রকাশিত গবেষণাপত্রে এই বিষয়েই আলোকপাত করা হয়েছে। দাবি করা হয়েছে, বহুদিনের এই ‘জটিল ধাঁধা’র সমাধান করে ফেলেছেন গবেষকরা।
২০১১ সালে নাসার গ্রাল মিশনে দুই রোবটিক স্পেসক্র্যাফট এব ও ফ্লো চন্দ্রপৃষ্ঠে ঘুরে বেড়িয়ে চাঁদের সবচেয়ে বিস্তারিত অভিকর্ষজ মানচিত্র প্রস্তুত করেছিল। এই খুঁটিনাটি পর্যবেক্ষণ থেকে দীর্ঘ সময় ধরে নিরীক্ষণ করে চলে চলেছেন বিজ্ঞানীরা।
বলে রাখা ভালো, আজ থেকে ৪৩০ কোটি বছর আগে চাঁদের মাটিতে আছড়ে পড়েছিল একটি অতিকায় গ্রহাণু। সেই বিস্ফোরণ ছিল বিপুল। আর সেই বিস্ফোরণের ধাক্কাতেই বদলে যায় চাঁদের অস্তিত্ব। এর ফলে চাঁদের দুই অর্ধের ভারসাম্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
গবেষণায় দেখা গেছে, চাঁদের অভ্যন্তরীণ ভাগ মোটেই সুসমঞ্জস নয়। পৃথিবীর দিকে চাঁদের যে পিঠ সেটা বেশি উষ্ণ। এই অংশে পৃথিবীর অভিকর্ষজ বলের প্রভাবও বেশি। সেই সঙ্গেই বিজ্ঞানীরা একটি বহুদিনের প্রচলিত ধারণাকেও মান্যতা দিয়েছেন।
চাঁদের পৃথিবীর দিকে ফেরানো পিঠে একসময় নিয়মিত অগ্ন্যুৎপাত হত। যার ফলে সেখানে ব্যাসাল্টিক শিলার বিশাল সমভূমি সৃষ্টি হয়েছে। অন্য প্রান্তটিতে রয়েছে বহু গহ্বর। এবং সেখানে লাভা উদ্গীরণের কোনো চিহ্নমাত্র নেই। এমনই নানা কারণে চাঁদের দুই পিঠে বৈপরীত্যের সৃষ্টি হয়েছে।