বৃহস্পতিবার, ২৪ জুলাই, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


বিশ্ব ডেস্ক

প্রকাশিত: জুলাই ২৩, ২০২৫, ০৭:০৪ পিএম

ভোটে হেরেও কেন পদে থাকতে চান জাপানের প্রধানমন্ত্রী

বিশ্ব ডেস্ক

প্রকাশিত: জুলাই ২৩, ২০২৫, ০৭:০৪ পিএম

জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবা। ছবি- সংগৃহীত

জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবা। ছবি- সংগৃহীত

জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবা তার লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি) সপ্তাহান্তের নির্বাচনে ঐতিহাসিক পরাজয়ের পর পদত্যাগ করতে যাচ্ছেন এমন খবর অস্বীকার করেছেন। তিনি জানান, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে করা শুল্ক চুক্তি সঠিকভাবে বাস্তবায়ন হচ্ছে কিনা, তা নিশ্চিত করাই এখন তার অগ্রাধিকার।

জাপানি দৈনিক ইয়োমিউরি শিম্বুন বুধবার (২৩ জুলাই) তাদের একটি বিশেষ সংস্করণে জানায়, ইশিবা তার প্রধান বাণিজ্য আলোচক রিওসেই আকাজাওয়ার কাছ থেকে একটি বিস্তারিত রিপোর্ট পাওয়ার পর জুলাইয়ের শেষ দিকে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। এতে করে তার উত্তরসূরি নির্বাচনের জন্য দলীয় নেতৃত্বের ভোট আয়োজন সহজ হবে।

তবে এ মাসের শুরুতে পদত্যাগের ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন এমন খবর নিয়ে আজ বুধবার সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ৬৮ বছর বয়সী ইশিবা বলেন, ‘আমি কখনো এমন কিছু বলিনি। গণমাধ্যমে যা বলা হচ্ছে, তা পুরোপুরি ভিত্তিহীন।’

এই গুজব ছড়ায় একদিন আগেই, মঙ্গলবার, যখন ইশিবা ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একটি নতুন বাণিজ্য চুক্তি ঘোষণা করেন। চুক্তিটি জাপানি গাড়ি আমদানির ওপর শুল্ক হ্রাস করে এবং টোকিওকে অন্যান্য পণ্যের ওপর নতুন শুল্ক থেকে ছাড় দেয়।

মঙ্গলবার ইশিবা ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একটি বাণিজ্য চুক্তি উন্মোচনের পর এই প্রতিবেদনগুলো প্রকাশিত হয়, যা জাপানি গাড়ি আমদানির উপর শুল্ক কমায় এবং টোকিওকে অন্যান্য পণ্যের উপর নতুন শুল্ক আরোপ থেকে রেহাই দেয়।

সোমবার প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবা ঘোষণা করেন, তিনি রাজনৈতিক শূন্যতা সৃষ্টি না করে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চলমান শুল্ক আলোচনা ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় দায়িত্ব পালন করবেন। তবে এই ঘোষণার পরপরই নির্বাচনে পরাজয়ের জেরে দলীয় ভেতর ও বাহির থেকে তাকে দ্রুত পদত্যাগ করার আহ্বান জানানো হয়।

এর আগের দিনের নির্বাচনে মধ্য-ডানপন্থী এলডিপি ও তাদের জোটসঙ্গী কোমেইতো পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষে (২৪৮ সদস্যবিশিষ্ট কম শক্তিশালী কক্ষ) সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারায়। এতে শুধু তাদের সংসদীয় ক্ষমতাই নয়, পুরো জাপানি রাজনৈতিক স্থিতিশীলতাই হুমকির মুখে পড়ে। ফলে ইশিবার ওপর পদত্যাগের চাপ আরও বেড়ে যায়।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী মার্কিন দখলদারিত্ব শেষের মাত্র তিন বছর পর ১৯৫৫ সাল থেকে এলডিপি প্রায় একটানা জাপান শাসন করে আসছে।

এই ভয়াবহ ভরাডুবির অর্থ হলো গত অক্টোবরে সংসদের নিম্নকক্ষেও সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারানো ক্ষমতাসীন জোট এখন সংসদের দুই কক্ষেই পিছিয়ে পড়েছে। এতে সরকারের জন্য কোনো নীতিগত লক্ষ্য বাস্তবায়ন আরও কঠিন হয়ে পড়েছে এবং রাজনৈতিক অস্থিরতা আরও তীব্র হয়েছে।

আজ বুধবার ইশিবা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে স্বাক্ষরিত নতুন বাণিজ্য চুক্তিকে স্বাগত জানান। তিনি বলেন, এখন জাপানি গাড়ি ও অন্যান্য পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রে ১৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হচ্ছে, যেখানে আগে তা ছিল ২৫ শতাংশ। এটি জাতীয় স্বার্থ রক্ষায় কঠিন আলোচনার ফল, যা দুই দেশকে আরও কর্মসংস্থান ও বিনিয়োগ তৈরিতে সহায়তা করবে।

তবে কিছু বিশ্লেষক এই চুক্তিকে সমালোচনার চোখে দেখছেন। শিজুওকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্র্যাজুয়েট স্কুল অব ম্যানেজমেন্ট, ইনফরমেটিক্স অ্যান্ড ইনোভেশনের ডিন সেইজিরো তাকেশিতা আল-জাজিরাকে বলেন, এই চুক্তি জাপানের পক্ষে ভালো কিনা, তা শুধু সংখ্যায় না দেখে গভীরভাবে বিশ্লেষণ করা উচিত।

রোববারের নির্বাচনে তরুণ ভোটারদের মধ্যে ব্যাপক হতাশা দেখা যায়। কারণ, বেতন বৃদ্ধির চেয়ে দ্রব্যমূল্য দ্রুত বেড়েছে এবং তারা দীর্ঘদিন ধরে সরকারের নীতিকে প্রবীণভিত্তিক বলে মনে করছে। এর ফলে অনেকে ঝুঁকে পড়েন নতুন রক্ষণশীল ও ডানপন্থী দলগুলোর দিকে, যেমন—ডেমোক্র্যাটিক পার্টি ফর দ্য পিপল এবং উগ্র-ডানপন্থী ‘জাপানিজ ফার্স্ট’ দলের সানসেইটো, যারা এবারের নির্বাচনে ভালো ফল করেছে।

ক্ষমতা গ্রহণের এক বছরেরও কম সময়ের মধ্যে ইশিবার সম্ভাব্য পদত্যাগ এলডিপির ভেতরে নেতৃত্ব পরিবর্তনের প্রতিযোগিতা শুরু করে দিতে পারে। একইসঙ্গে দলটিকে নতুন উদীয়মান ডানপন্থী রাজনৈতিক শক্তিগুলোর ক্রমবর্ধমান চ্যালেঞ্জের মুখোমুখিও হতে হবে।

এলডিপি তহবিল কেলেঙ্কারির কারণেও ক্ষোভ রয়ে গেছে।

বার্তা সংস্থা এএফপি’কে হিরোশিমার ৮০ বছর বয়সী নাওমি ওমুরা বলেন, ‘আমি সত্যিই চাই জাপানের অবস্থা ভালো হোক। কিন্তু জনসংখ্যা দিন দিন কমছে, আর আমার মনে হচ্ছে এখানে বাস করা ক্রমেই কঠিন হয়ে পড়ছে। হতাশাজনক বিষয় হলো জাপান এখনো আমেরিকার সঙ্গে শক্ত অবস্থান নিতে পারছে না। তবে কম শুল্কে সম্মত হওয়াটা ভালো দিক।’

এদিকে, বিরোধী দলগুলোর কেউই ক্ষমতাসীনদের সঙ্গে সরাসরি জোট গঠনে আগ্রহ দেখায়নি। তবে তারা জানিয়েছে, নীতিগত বিষয়ে সহযোগিতার জন্য তারা প্রস্তুত।

Shera Lather
Link copied!