শ্রাবণ মাস বৃষ্টির জন্য বিশেষভাবে পরিচিত। ধানচাষসহ অন্যান্য মৌসুমি ফসলের জন্য শ্রাবণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে শ্রাবণের শেষ ভাগে আবহাওয়া ধীরে ধীরে পরিবর্তিত হতে শুরু করে। কখনো অতিবৃষ্টি, কখনো বা অনাবৃষ্টির সম্ভাবনা থাকে। এমন সময়ে কৃষককে হতে হয় সচেতন, দূরদর্শী ও পরিশ্রমী। শ্রাবণের শেষে সঠিক পরিকল্পনা ও পদক্ষেপ গ্রহণই আগাম ফসলের সাফল্যের চাবিকাঠি।
শ্রাবণের শেষে কৃষকের করণীয়-
ধানের বোরো জাতের ধান রোপণের প্রস্তুতি
শ্রাবণের শেষে অনেক এলাকায় রোপণের জন্য বোরো ধানের মাটি প্রস্তুতি শুরু হয়। জমি নরম করে গোবর বা জৈব সার মিশিয়ে মাটি উর্বর করতে হবে। ফসলের ধরন অনুযায়ী জমি সমতল করা ও জল নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করতে হবে।
বীজ নির্বাচন ও প্রাথমিক প্রস্তুতি
বোরো ফসলের জন্য বীজ ভালো মানের এবং রোগমুক্ত হতে হবে। আগেই বীজ ভিজিয়ে বা উন্নত প্রযুক্তি অনুযায়ী বীজজাত প্রস্তুত করতে হবে যাতে বীজ সঠিকভাবে অঙ্কুরিত হয়।
পশু পালনের জন্য খাদ্য ও পানি নিশ্চিতকরণ
গরু-ছাগল ও অন্যান্য পশুদের জন্য পর্যাপ্ত ঘাস ও খাবারের ব্যবস্থা করতে হবে। জলাশয় পরিষ্কার ও পোকামাকড়মুক্ত রাখতে হবে যাতে পশুর স্বাস্থ্য ভালো থাকে।
জমিতে সেচ ব্যবস্থার পর্যালোচনা
শ্রাবণের পর মাঠ শুকনো হতে শুরু করলে সেচের প্রয়োজন হতে পারে। সেচের পাম্প ও নলকূপ পরীক্ষা করে রাখতে হবে যেন বোরো ফসল রোপণের সময় সেচ সুবিধা পাওয়া যায়।
পোকামাকড় ও রোগের প্রতিরোধ
শ্রাবণের শেষে অনেক সময় ধানের পোকা ও বিভিন্ন রোগ দেখা দিতে পারে। সময় মতো কীটনাশক স্প্রে করতে হবে এবং রোগ শনাক্ত করেই প্রাথমিক ব্যবস্থা নিতে হবে।
পরবর্তী ফসলের পরিকল্পনা ও বীজ সংগ্রহ
ধানের পাশাপাশি অন্যান্য সবজি বা ফসল চাষ করার পরিকল্পনা নিতে হবে। সঠিক বীজ সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করতে হবে।
জমি প্রস্তুতির জন্য পলিথিন সরানো ও মাটি পরীক্ষা
শ্রাবণের শেষে জমিতে জমে থাকা প্লাস্টিক ও কাদা পরিষ্কার করতে হবে। প্রয়োজন হলে মাটির পিএইচ ও পুষ্টি পরীক্ষা করিয়ে সার প্রয়োগের পরিমাণ নির্ধারণ করতে হবে।
সেচের সময় নির্ধারণ
শ্রাবণের শেষে বৃষ্টি কমে গেলে বোরো ফসলের জন্য সেচের সময় ঠিক করে নিতে হবে, যাতে ফসলের পানি প্রয়োজনীয়তা পূরণ হয়।
শ্রাবণের শেষে কৃষকের সচেতনতা ও পরিপূর্ণ প্রস্তুতি আগামী ফসলের সফলতা নির্ধারণ করে। সময়োপযোগী কাজ এবং রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখলেই ধানসহ অন্যান্য ফসল ভালো ফলন দেবে।