ঢাকা শনিবার, ০৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

২০৫০ সালে দ্বিগুণ হবে সমুদ্রের ওপর মানুষের চাপ: গবেষণা

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৬, ২০২৫, ০৭:৪১ পিএম
পানি দূষণ। ছবি- সংগৃহীত

বিশ্বব্যাপী বাণিজ্যের ৯০ শতাংশেরও বেশি কার্যক্রম সমুদ্রপথের ওপর নির্ভরশীল। আর সমুদ্রে ক্রমবর্ধমান বাড়ছে দূষণ ও জলবায়ু চাপের ঝুঁকি। সম্প্রতি বিজ্ঞান সাময়িকী সায়েন্স-এ প্রকাশিত একটি গবেষণায় সতর্ক করা হয়েছে যে, বর্তমান প্রবণতা অব্যাহত থাকলে ২০৫০ সালের মধ্যে সমুদ্রের ওপর মানুষের প্রভাব দ্বিগুণ হয়ে যেতে পারে।

গবেষণায় সমুদ্রের উষ্ণতা বৃদ্ধি, মৎস্য সম্পদের জৈববস্তুর ক্ষয়, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, অ্যাসিডিফিকেশন এবং পুষ্টি দূষণের মতো চাপের সম্মিলিত প্রভাব কীভাবে সামুদ্রিক বাস্তুতন্ত্রকে বিপজ্জনক সীমার দিকে ঠেলে দিচ্ছে তা তুলে ধরা হয়েছে।

গবেষণার প্রধান লেখক বেন হ্যালপার্ন বলেন, ‘মহাসাগরের ওপর আমাদের ক্রমবর্ধমান প্রভাব ২০৫০ সালের মধ্যে দ্বিগুণ হবে। এটি ইতোমধ্যেই যথেষ্ট পরিমাণ হয়েছে। এটি অত্যন্ত উদ্বেগজনক। কারণ প্রভাবগুলো কেবল বৃদ্ধি পাবে না, বরং এত দ্রুত বৃদ্ধি পাবে যে তা অনাকাঙ্ক্ষিত প্রভাব তৈরি করবে।’

তিনি আরও ব্যাখ্যা করেন, ‘প্রায় দুই দশক ধরে আমরা একক বিষয়ের ওপর মনোযোগ দিয়েছি, কিন্তু এই চাপগুলোর সম্মিলিত প্রভাব একসঙ্গে পর্যবেক্ষণ করা হয়নি। আগে ধারণা ছিল, সমুদ্র এত বিশাল যে মানুষের প্রভাব এত খারাপ হতে পারবে না। কিন্তু প্রমাণ এখন অন্যথা দেখাচ্ছে।’

বিশ্বব্যাপী উষ্ণায়নের ফলে সমুদ্র দ্রুত উত্তপ্ত হচ্ছে, অনিয়ন্ত্রিত মাছ ধরা এবং সামুদ্রিক বাণিজ্য এই চাপকে আরও তীব্র করছে। গ্রীষ্মমন্ডলীয় ও মেরু অঞ্চলের বাস্তুতন্ত্র এমন সীমায় পৌঁছাচ্ছে যা পার হওয়া গেলে পুনরুদ্ধার সম্ভব হবে না। উপকূলীয় অঞ্চলগুলোও প্রবাল প্রাচীরের হ্রাস, মিঠা ও খারাপ পানির ভারসাম্যের ব্যাঘাত, প্রজনন ক্ষেত্রের সংকোচন এবং ম্যানগ্রোভের বিলুপ্তির মতো সমস্যার মুখোমুখি। এসব পরিস্থিতি সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্য ও স্থানীয় জীবিকাকে হুমকির মুখে ফেলেছে।

গবেষকরা সতর্ক করেছেন, বিশেষ করে খাদ্য ও কর্মসংস্থানের জন্য সমুদ্রের ওপর নির্ভরশীল দেশগুলো সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। হ্যালপার্ন বলেন, ‘এই দেশগুলোর মধ্যে অনেকই উল্লেখযোগ্য ক্ষতির সম্মুখীন হবে।’

তিনি আরও বলেন, বিশ্ব উষ্ণায়ন হ্রাস, আবাসস্থল সংরক্ষণ, জলবায়ু-স্থিতিস্থাপক নীতি গ্রহণ এবং মৎস্য ব্যবস্থাপনা শক্তিশালী করার মতো জরুরি পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। হ্যালপার্ন উল্লেখ করেন, ‘ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে শক্তিশালী পরিকল্পনা গ্রহণ আমাদের হাতে একটি কার্যকর হাতিয়ার রাখে। আমরা এখনও সেই ভবিষ্যত পরিবর্তন করতে পারি; এই গবেষণাপত্রটি একটি সতর্কবার্তা, কোনো প্রেসক্রিপশন নয়।’