আজ থেকে ঠিক ২৩ বছর আগে, ২০০২ সালের এই দিনে এক বিমান দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার কিংবদন্তি ক্রিকেটার হানসি ক্রোনিয়ে।
মাত্র ৩২ বছর বয়সে, যখন তার ক্রিকেট জীবনের অনেক কিছুই বাকি ছিল, ঠিক তখনই আকস্মিক এই মৃত্যু ক্রিকেট বিশ্বকে স্তব্ধ করে দিয়েছিল। তার নাটকীয় পতন এবং তারপর মর্মান্তিক মৃত্যু– এই সবকিছুই যেন এক ট্র্যাজিক গল্পের অংশ হয়ে আছে।
হানসি ক্রোনিয়ে, একসময় দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেট দলের অধিনায়ক এবং বিশ্ব ক্রিকেটের অন্যতম সফল অলরাউন্ডার ছিলেন। তার নেতৃত্বে দক্ষিণ আফ্রিকা অনেক সাফল্য অর্জন করেছিল।
কিন্তু ২০০০ সালে ম্যাচ ফিক্সিং কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে পড়া তাকে ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম কলঙ্কিত অধ্যায়ে পরিণত করে। এই কেলেঙ্কারির পর তার ক্রিকেট জীবন এলোমেলো হয়ে যায়। একসময়কার নায়ক রাতারাতি পরিণত হন খলনায়কে। ক্রিকেট থেকে আজীবন নিষিদ্ধ হওয়ার মাত্র ২৬ মাস পর জর্জের কাছে এক বিমান দুর্ঘটনায় মারা যান এই কিংবদন্তি ক্রিকেটার।
ক্রোনিয়ের মৃত্যু দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেটের জন্য এক গভীর ক্ষত তৈরি করেছিল সেদিন। তার প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার পাশাপাশি, ম্যাচ ফিক্সিংয়ের মতো কালো অধ্যায়টিও আজও তার নামের সঙ্গে জড়িয়ে আছে।
টেস্ট ক্রিকেটে হানসি ক্রোনিয়ে
হানসি ক্রোনিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে ৬৮টি টেস্ট ম্যাচ খেলে ১১১ ইনিংসে ৯ বার অপরাজিত থেকে মোট ৩৭১৪ রান সংগ্রহ করেন। তার সর্বোচ্চ রান ছিল ১৩৫। টেস্টে তার ব্যাটিং গড় ছিল ৩৬.৪১। টেস্টে ৬টি সেঞ্চুরি এবং ২৩টি হাফ সেঞ্চুরি হাঁকান হানসি।
বোলিংয়ে, ডানহাতি মিডিয়াম পেসার হিসেবে ক্রোনিয়ে ৮৫ ইনিংসে ৪৩টি উইকেট শিকার করেছেন। তার বোলিং গড় ছিল ২৯.৯৫, এবং সেরা বোলিং ফিগার ছিল ৩/১৪।
অধিনায়ক হিসেবে ক্রোনিয়ে ৫৩টি টেস্টে দক্ষিণ আফ্রিকাকে নেতৃত্ব দিয়ে ২৭টিতে জয় এবং ১১টিতে পরাজিত হন।
ওয়ানডে ক্রিকেটে হানসি ক্রোনিয়ে
ওয়ানডে ক্রিকেটে হানসি ক্রোনিয়ে ১৮৮টি ম্যাচ খেলে মোট ৫৫৬৫ রান করেছেন। ওয়ানডেতে তার সর্বোচ্চ স্কোর ছিল ১১২, এবং তার ব্যাটিং গড় ছিল ৩৮.৬৪। অন্যদিকে তিনি ওয়ানডেতে ২টি সেঞ্চুরি এবং ৩৯টি হাফ সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন।
ওয়ানডেতে ক্রোনিয়ে ১৫৩ ইনিংসে ১১৪টি উইকেট লাভ করেন। তার বোলিং গড় ছিল ৩৪.৭৮, এবং সেরা বোলিং ফিগার ছিল ৫/৩২।
এদিকে, ওয়ানডে অধিনায়ক হিসেবে তিনি ১৪০টি ম্যাচে দলকে নেতৃত্ব দিয়ে ৯৯টিতে জয়লাভ করেন। তার নেতৃত্বে ১৯৯৮ সালের আইসিসি নকআউট ট্রফি জেতে দক্ষিণ আফ্রিকা, যা দেশের একমাত্র প্রধান আইসিসি শিরোপা।