বৃহস্পতিবার, ০১ মে, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


মোস্তাফিজুর রহমান সুমন

প্রকাশিত: মার্চ ২১, ২০২৫, ১২:১৬ এএম

ভারতীয় মিডিয়ার অব্যাহত প্রপাগান্ডা

টার্গেট সরকার ও সেনাবাহিনী

মোস্তাফিজুর রহমান সুমন

প্রকাশিত: মার্চ ২১, ২০২৫, ১২:১৬ এএম

টার্গেট সরকার ও সেনাবাহিনী

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

ভারতীয় প্রভাবশালী গণমাধ্যমগুলো অনবরত বাংলাদেশকে নিয়ে নেতিবাচকপ্রপাগান্ডা চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের মূল এজেন্ডা হলো দেশ-বিদেশে বাংলাদেশ সরকার, সেনাবাহিনী ও সাধারণ মানুষের মতামতকে বিশ্বের কাছে নেগেটিভভাবে উপস্থাপন করা।

রাষ্ট্রের মূল স্তম্ভ সরকার, সেনাবাহিনী ও জণগণের মধ্যে ফাটল ধরিয়ে তাদের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে দেশটির মিডিয়ায় বাংলাদেশের বিরুদ্ধে গ্লোবাল ক্যাম্পেইন চলাচ্ছে। ভারতের মাফিয়াগিরি ও ফ্যাসিস্ট প্রপাগান্ডার বিরুদ্ধে বাংলাদেশ সরকার, সেনাবাহিনী ও জনগণ প্রতিনিয়ত প্রতিবাদ করে গেলেও কাজের কাজ কিছুই হচ্ছেনা।

এদিকে, ভারতে বসে বাংলাদেশের সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দাপ্রধান তুলসি গ্যাবার্ডের মন্তব্যকে প্রচারের পর বিতর্কের ঝড় বয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ সরকারের দাবি, কোনো নির্দিষ্ট তথ্য-প্রমাণ ছাড়াই এ ধরনের বিভ্রান্তিকর অভিযোগ অন্যায় ও অতিরঞ্জিতভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। 

বাংলাদেশের রাজনৈতিক দল এবং কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা মরে করছেন, তুলসির এই মন্তব্য ভারতীয় প্রপাগান্ডানির্ভর এবং সত্যের অপলাপ। তুলসি গ্যাবার্ড ভারতীয় প্রপাগান্ডার সুরে তাল মিলিয়েছেন। মোদি ঘনিষ্ঠ আদানি গ্রুপের এনডিটিভিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তুলসি বাংলাদেশের সার্বিক পরিস্থিতি ও বিশেষ করে সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে ট্রাম্প প্রশাসন ‘গভীর উদ্বিগ্ন’ বলে মন্তব্য করেন। 

বাংলাদেশ নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, ‘ইসলামি সন্ত্রাসবাদী’রা নানা দেশে ‘ইসলামি খেলাফতে’র আদর্শে শাসনক্ষমতা হাতে নিতে চায়। কিন্তু প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও তার প্রশাসন এই আদর্শকে পরাস্ত করতে অঙ্গীকারবদ্ধ। ‘ইসলামি সন্ত্রাসবাদে’র বিপদ বাংলাদেশকেও প্রভাবিত করছে বলে পাশাপাশি বার্তা সংস্থা এএনআইকে দেওয়া দ্বিতীয় আর একটি সাক্ষাৎকারেও এমন মন্তব্য করেন তুলসি গ্যাবার্ড। 

অন্যদিকে কোনো নির্দিষ্ট প্রমাণ ছাড়াই এ ধরনের বিভ্রান্তিকর অভিযোগ তোলায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পক্ষ থেকে সঙ্গে সঙ্গে সোমবার রাতে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানানো হয়। 

সরকার বিবৃতিতে তুলসি গ্যাবার্ডের মন্তব্য বিভ্রান্তিকর এবং বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ও সুনামের জন্য ক্ষতিকর উল্লেখ করে বলেছে, ‘বাংলাদেশ ঐতিহ্যগতভাবে শান্তিপূর্ণ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক ইসলাম চর্চার জন্য সুপরিচিত এবং চরমপন্থা ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে অসাধারণ অগ্রগতি অর্জন করেছে। গ্যাবার্ডের মন্তব্য কোনো নির্দিষ্ট প্রমাণ বা অভিযোগের ওপর ভিত্তি করে করা হয়নি বলে বাংলাদেশ সরকার ওই বিবৃতিতে দাবি করেছে।

যুদ্ধংদেহী ভারতীয় গণমাধ্যম বিষয়গুলোকে যেভাবে প্রচার করেছে, তাতে পরিস্থিতি আরও খারাপ হচ্ছে। তারা যাচাই-বাছাই ছাড়াই বাংলাদেশবিরোধী সংবাদ প্রকাশ করে যাচ্ছে। ভারতীয় পুরাতন ছবি, ভিডিও ও তথ্য দিয়ে বাংলাদেশের ঘটনা বলে চালিয়ে দিচ্ছে, যা আন্তর্জাতিক ফ্যাক্ট চেকিং সংস্থাগুলো প্রমাণ করেছে। তারপরও থামছেনা তাদের মিথ্যাচার। 

ভারতীয় মোদি সমর্থিত অন্তত অর্ধশতাধিক মূলধারার মিডিয়া বাংলাদেশ সরকার ও সেনাবাহিনী নিয়ে ঘণ্টায় ঘণ্টায় মিথ্যা তথ্য দিয়ে সংবাদ প্রচার করছে। এসব মিথ্যা সংবাদের বিরুদ্ধে প্রতিনিয়ত প্রতিবাদ জানিয়ে আসছেন প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলো ও সেনাবাহিনী। প্রতিবাদ জানিয়েও তাদের থামানো যাচ্ছেনা। 

ভারত সরকারের কাছে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনসহ দায়িত্বশীলরা ভারতীয় মিডিয়ায় অপপ্রচার ও মিথ্যা সংবাদ প্রকাশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করেও মোদি সরকারের সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না। বরং বিজেপির সরকারের উচ্চপদস্ত নেতা-মন্ত্রীরা আরও বেশি প্রপাগান্ডা ও মিথ্যা তথ্য দিয়ে বক্তব্য দিচ্ছেন।

গত ৫ আগস্টের পর থেকে ভারতীয় গণমাধ্যমে প্রচারিত সংবাদগুলো দেখলে একটি ধারণা স্পষ্ট হয়, বাংলাদেশ একটি হিন্দুবিদ্বেষী দেশ। মৌলবাদীরা জঙ্গি রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। যেভাবে বিষ ছড়ানো হচ্ছে, যে ভাষা ব্যবহার করা হচ্ছে, যেভাবে বাংলাদেশকে নিয়ে বিশ্বব্যাপী অবমাননাকর ভাবমূর্তি সৃষ্টি করা হচ্ছে-ভারতীয় মিডিয়ার প্রপাগান্ডার মাধ্যমে ভারতীয় জনগণের মনে ঘৃণা তৈরি করা তারমূল উদ্দেশ্য।বাংলাদেশের জনগণের মাঝে ভারতবিদ্বেষী মনোভাব বাড়ছে। 

ভারতীয় মিডিয়ার প্রপাগান্ডার কারণে দুই দেশে মধ্যে যে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হচ্ছে তা স্থায়ী ক্ষত তৈরি করতে পারে বলে বাংলাদেশ মনে করে। প্রতিবেশী দেশকে ঘৃণার পাত্র হিসেবে উপস্থাপন করে ভারত সাময়িক লাভবান হলেও দিনশেষে উভয় দেশেরই ক্ষতি হচ্ছে। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে বিরূপ ভাবমূর্তি তৈরি করে ভারত তাদের তাদের সব প্রতিবেশীর ওপর আধিপত্য বিস্তার করতে চায় এবং কাউকেই নিজেদের নীতি গ্রহণের সুযোগ দিতে রাজি নয়Ñ এই নীতিতে এগুচ্ছে।

২০২৪ সালের ৪ আগস্ট পর্যন্ত ভারতীয় গণমাধ্যম ও নেতাদের দৃষ্টিতে বাংলাদেশ ছিল অতি উত্তম প্রতিবেশী। ৫ আগস্টের পর তাদের সেই দৃষ্টিভঙ্গি আচমকা পাল্টে গেল! কারণ তাদের দীর্ঘদিনের মিত্র আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হয়েছেন। হঠাৎ বাংলাদেশ অতি উত্তম প্রতিবেশীর মর্যাদা থেকে অন্যতম নিন্দিত দেশে পরিণত হলো! 

৫ আগস্ট স্বৈরাচার শেখ হাসিনার ছাত্র-জনতার আন্দোলনের ভয়ে ভারত পালিয়ে গেলেন। দেশে নতুন অন্তর্বর্তী সরকার গঠন হলো। কিন্তু ভারত প্রথম থেকেই এটা মেনে নেয়নি। অবশ্য ভারতীয় মিডিয়া বা মোদি সরকারের কাছে এটি ছিল ষড়যন্ত্রমূলক। জঙ্গি হামলা করে মৌলবাদীরা ক্ষমতা দখল করেছে। 

উল্টো তারা ‘ষড়যন্ত্র তত্ত্ব’ তৈরি করেছে এবং আজ অবধি তারা সেই তত্ত্বই আঁকড়ে ধরে আছে। ভারত বিষয়টি মানতেই পারছে না যে, এই সরকার পরিবর্তন বাংলাদেশের মানুষের মতের প্রতিফলন। দেশটি বিশ্বাস করে যে, এটি পাকিস্তান, চীন বা যুক্তরাষ্ট্রের কাজ, বাংলাদেশের জনগণের নয়।

ভারতের বাংলা ভাষার স্যাটেলাইট টেলিভিশন চ্যানেল ‘রিপাবলিক বাংলা’, হিন্দুস্তান টাইমস, জি ২৪ ঘণ্টা ও আজতক, দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, মিন্ট, ইন্ডিয়া টুডে, টিভি নাইন, ওয়ার্ল্ড উজ ওয়ান নিউজ (ডব্লিউআইওএন) ও এই সময়সহ ভারতীয় মিডিয়াগুলোতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে অভ্যুত্থান চেষ্টা, সেনাপ্রধান ও অন্যান্য সেনা কর্মকর্তাদের নিয়ে গুজব ছড়ানো, রাজনৈতিক সহিংসতাকে সাম্প্রদায়িক আক্রমণ হিসেবে দেখানো, মুসলিমদের স্থাপনায় হামলাকে হিন্দুদের স্থাপনায় হামলা দাবি, ভিন্ন স্থাপনায় অগ্নিসংযোগের ঘটনাকে হিন্দুদের স্থাপনায় হামলার দাবি, জুলাই-আগস্টের অভ্যুত্থানকে একটি জঙ্গি বা ইসলামিক শাসনের উত্থান হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের গণধর্ষণ ও হত্যার দাবির মাধ্যমে নিয়মিত অপতথ্যের প্রচার হয়েছে সীমান্তের ওপার থেকে। 

‘জয় বাংলা’ স্লোগান নিষিদ্ধের ভুয়া দাবি, ড. ইউনূসের অসুস্থতা নিয়ে অপপ্রচার, শেখ হাসিনার ভুয়া চিঠি, নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠনের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার ভুয়া দাবি, পাকিস্তানি বাহিনীর বাংলাদেশে টহল দেওয়ার ভুয়া দাবির মতো বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ নানা ইস্যুতেও অপতথ্যের প্রচারে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোর পাশাপাশি এ সময় সরব ছিল দেশটির মূল ধারার গণমাধ্যমগুলোও।

ভারতের গণমাধ্যম একে অপরকে ইন্ধন জুগিয়েছে এবং শেখ হাসিনার পতনকে পাকিস্তানের আইএসআইয়ের সহযোগিতায় জামায়াতে ইসলামী ও তাদের ছাত্রসংগঠন শিবিরের কাজ বলে আষাঢ়ে গল্প তৈরি করেছে। তাদের যুক্তি হচ্ছে, আন্দোলন হয়তো শিক্ষার্থীরাই শুরু করেছিল, কিন্তু ষড়যন্ত্রকারীরা খুব অল্প সময়ের মধ্যেই এটাকে নিজেদের আয়ত্তে নিয়ে গেছে। এটা ছিল ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রীর ভাষ্য, যার টোপে আটকে গেছে ভারতীয় গণমাধ্যম। 

রিউমর স্ক্যানার ২০২৪ সালে ভারতীয় গণমাধ্যমে প্রচারিত ভুল তথ্য নিয়ে প্রকাশিত ফ্যাক্টচেকগুলো বিশ্লেষণ করে ৩২টি ঘটনায় দেশটির ৭২টি সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বাংলাদেশকে জড়িয়ে ভুল তথ্য প্রচার হতে দেখেছে। এই সংবাদমাধ্যমগুলোতে সর্বোচ্চ ১০টি থেকে সর্বনিম্ন একটি ভুল তথ্য সম্বলিত প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া গেছে। ৭২টি সংবাদমাধ্যমে থাকা ১৩৭টি প্রতিবেদন যাচাই করে ভুল তথ্য প্রচারের প্রমাণ মিলেছে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদন এবং মন্তব্যে মনে হয় তারা স্বীকারই করতে চায় না যে, গত ১০ বছর তাদের দেশের ক্ষমতাসীন দলটির লক্ষ্য হচ্ছে একটি হিন্দু রাষ্ট্র। যেমনটা বাংলাদেশের জামায়াতে ইসলামীর আদর্শ একটি ইসলামি রাষ্ট্র। এ দুটোর তফাত কিন্তু খুব বেশি নয়। 

ভারতীয় গণমাধ্যমের বক্তব্য এমন যে, তারা কট্টর হিন্দু হলেও অসুবিধা নেই। কিন্তু বাংলাদেশের মুসলমান কোনোভাবেই মুসলমান হতে পারবে না। আরও একটি বিষয়, ভারত বাংলাদেশের স্বাধীনতায় সাহায্য করেছিল ঠিকই। কিন্তু তাই বলে ভারতের অঙ্গুলিহেলনে বাংলাদেশের চলতে হবে এমন কোনো দাসখত তো কেউ লিখে দেয়নি। 

দুঃখজনকভাবে কিছু অর্ধসত্য তুলে এনে তা অতিরঞ্জন করে ভারতীয় সামাজিক মাধ্যম এবং টেলিভিশন চ্যানেলগুলোতে প্রচার করা যেন দস্তুর হয়ে গেছে। সাংবাদিকতার ন্যূনতম মানও আর বজায় থাকছে না। অধিকাংশ ভারতীয় গণমাধ্যমের একই দশা। তবে সবচেয়ে উদ্বেগজনক ব্যাপার হলো, সীমান্তের ওপারের ভুয়া তথ্য প্রচার পরিস্থিতিকে শান্ত না করে বরং উস্কে দিচ্ছে। 

এতে ভারতের সংখ্যালঘুদের পাশাপাশি বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের জন্যও পরিস্থিতি উদ্বেগজনক হয়ে উঠছেএবং তা এতটাই খারাপ হচ্ছে যে, সেটা সামাল দেওয়ার জন্য সরকারি পর্যায়ে হস্তক্ষেপ দরকার হচ্ছে যেন পরিস্থিতি একেবারে নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে না যায়। 

স্বৈরাচার শেখ হাসিনাকে গত ১৫ বছর ক্ষমতায় টিকিয়ে রেখে বাংলাদেশ থেকে একতরফা যে সুবিধা আদায় করে নিয়েছে, সেসব বেহাত হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় ভারত বেশ অস্থির হয়ে পড়েছে। ক্ষমতায় থাকাকালে মুজিব কন্যা হাসিনা যা দিয়েছেন, ভারত তা প্রত্যাশাও করেনি। শেখ হাসিনা প্রকাশ্যে বেশ কয়েকবার এ কথাও বলেছেন। 

২০২৪-এর জাতীয় নির্বাচনে হাসিনাকে ক্ষমতায় রাখার বিনিময়ে, ভারতের পূর্বাঞ্চলে সামরিক ও বেসামরিক পণ্য পরিবহনের জন্য বাংলাদেশের ওপর দিয়ে ১৩টি পয়েন্টে রেল যোগাযোগের যে সুযোগ সৃষ্টি হয়েছিল, হাসিনার গদিচ্যুতির জন্য তা বোধহয় হাতছাড়া হয়ে যাচ্ছে। 

নির্বাচনের আগে, গত বছর সেপ্টেম্বরে শেখ হাসিনা ভারতে গিয়ে এ-সংক্রান্ত একটি সমঝোতা স্বাক্ষরও করে এসেছিলেন। এসব কারণে ভারতের মেইনস্ট্রিম মিডিয়ায় মিথ্যাচার প্রতিবেদন পরিবেশন করে অন্তর্বর্তী সরকার ও সরকারপ্রধানকে অপমান করতেও ছাড়ছে না। 

বিশেষ করে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের নামের আগে অনাকাক্সিক্ষত টাইটেল বসিয়ে হেয়প্রতিপন্ন করে লেখা প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এতে তারা বিকৃত রুচির পরিচয় দিয়েছেন।

গত ১৩ মার্চ ভারতের কিছু সংবাদমাধ্যমে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে ‘অভ্যুত্থান বা অস্থিতিশীলতার’ ভিত্তিহীন খবর প্রকাশিত হয়েছে উল্লেখ করে একে ‘ভিত্তিহীন এবং দায়িত্বজ্ঞানহীন’ বলে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। 

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ প্রতিক্রিয়া জানানো হয়। এর আগে ১১ মার্চ ভারতীয় গণমাধ্যমে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী নিয়ে প্রকাশিত সংবাদ ‘মিথ্যা ও পরিকল্পিত’ বলে দাবি করেছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর বা আইএসপিআর।

এ ছাড়া, বেশ কয়েকটি অনলাইন পোর্টাল ও বিতর্কিত টেলিভিশন চ্যানেলও এই মিথ্যাচার প্রচারে যুক্ত হয়েছে, যা সেনাবাহিনী ও জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টির অপপ্রয়াস ছাড়া কিছুই নয় বলে মনে করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। বিবৃতিতে ভারতীয় গণমাধ্যমকে ভিত্তিহীন খবর প্রকাশ থেকে বিরত থাকার অনুরোধ জানিয়েছে সেনাবাহিনী। 

একইসঙ্গে এসব গণমাধ্যম সেনাবাহিনী সম্পর্কিত প্রতিবেদন প্রকাশের আগে আইএসপিআরের সঙ্গে যোগাযোগ করে যথাযথ মন্তব্য ও তথ্য প্রকাশেরও অনুরোধ জানানো হয়। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী দেশের সার্বভৌমত্ব, অখণ্ডতা ও নিরাপত্তা রক্ষায় তার অঙ্গীকারে অবিচল। আমরা সব সংবাদমাধ্যমকে দায়িত্বশীল আচরণ করার এবং অপ্রয়োজনীয় উত্তেজনা ও বিভ্রান্তি ছড়ায় এমন মিথ্যা বক্তব্য প্রচার থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানাচ্ছি।
 

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!