প্রশান্ত মহাসাগরে ৮৩ বছর আগে নিখোঁজ হওয়া বিমানের সন্ধান পাওয়া গেছে। স্যাটেলাইট চিত্রে পাওয়া ধ্বংসাবশেষের ছবি দেখে বিমানটি খুঁজতে প্রত্যন্ত দ্বীপে যাচ্ছেন গবেষকরা। ইন্ডিয়ানা অঙ্গরাজ্যের পারডু বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা বলছেন, স্যাটেলাইটের মাধ্যমে ‘খুব শক্তিশালী’ প্রমাণ পেয়েছি যে, বস্তুটি আইকনিক বিমান।
বৃহস্পতিবার (২ সেপ্টেম্বর) এ তথ্য জানিয়েছে সিবিএস নিউজ।
প্রতিবেদনে বলা হয়, মার্কিন লেখক অ্যামেলিয়া এয়ারহার্ট ইয়ারহার্ট ১৯৩৭ সালের ২ জুলাই পৃথিবী প্রদক্ষিণে বের হয়ে প্রশান্ত মহাসাগরের ওপর নিখোঁজ হন। ন্যাভিগেটর ফ্রেড নুনানও তার সঙ্গে ছিলেন। তাদের বহনকারী বিমান ইলেকট্রা ১০-ই আর কখনো পাওয়া যায়নি। সম্প্রতি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই সংক্রান্ত রেকর্ড প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছেন।
২০২০ সালে পারডু বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা স্যাটেলাইট চিত্রে কিরিবাতির নিকুমারোরোর একটি ছোট দ্বীপে ‘দৃশ্যমান অসঙ্গতি’ শনাক্ত করেন। এটি এয়ারহার্ট ও নুনানের পরিকল্পিত গন্তব্য থেকে প্রায় ৪০০ মাইল দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থিত।
চলতি বছরের নভেম্বরে পারডু বিশ্ববিদ্যালয়, পার্ডু রিসার্চ ফাউন্ডেশন ওবং প্রত্নতাত্ত্বিক ইনস্টিটিউটের দল নিকুমারোরো ভ্রমণ করবেন। তারা প্রথমে জায়গার ছবি ও ভিডিও সংগ্রহ করবেন, তারপর ম্যাগনেটোমিটার ও সোনার ডিভাইস দিয়ে এলাকা স্ক্যান করবেন। পরে বস্তুটি খনন করে পানি থেকে তুলে শনাক্ত করার চেষ্টা করা হবে।
ইন্টারন্যাশনাল গ্রুপ ফর হিস্টোরিক এয়ারক্রাফ্ট রিকভারি মনে করে, ইয়ারহার্ট নিকুমারোরোতে অবতরণ করে দ্বীপে আটকা পড়েছিলেন। প্রত্নতাত্ত্বিক উত্তরাধিকার ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক রিচার্ড পেটিগ্রু বলেন, এই অভিযান ‘বন্দুকের ধোঁয়ার প্রমাণ’ খুঁজে পাওয়ার সুযোগ করে দেবে।
পেটিগ্রু আরও জানান, তারা স্যাটেলাইট ছবি, ঐতিহাসিক গবেষণা ও অন্যান্য ছবির মাধ্যমে প্রমাণ সংগ্রহ করেছেন। তিনি বলেন, ‘যদি আমরা সঠিক হই, তাহলে হারানো ইলেকট্রা শনাক্ত করতে পারব। প্রমাণ খুব শক্তিশালী।’
তবে, জুলাই মাসে এনবিসি নিউজকে রিক গিলেস্পি বলেন, ‘আমরা সেই জায়গায় খোঁজ করেছি, সেখানে কিছুই নেই।’
পারডু বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট স্টিভ শুল্টজ বলেন, বস্তুটি এয়ারহার্টের বিমান হিসেবে শনাক্ত হলে বিশ্ববিদ্যালয় বিমানটি ফেরত আনার আশা করছে। এয়ারহার্ট ১৯৩০-এর দশকে দুই বছর পারডুতে কাজ করেছিলেন এবং বিমানটি বিশ্বজুড়ে ভ্রমণের পর বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরিয়ে আনার পরিকল্পনা ছিল।
শুল্টজ বলেন, ‘ঐতিহাসিক উড্ডয়নের পর ইলেকট্রা ফেরত পাঠানোর মূল পরিকল্পনা পূরণের দিকে এটি প্রথম পদক্ষেপ হবে।’